Baranagar Murder: সুরক্ষিত কলকাতার ‘সুরক্ষা’য় প্রশ্ন: থানা থেকে ১ কিমি দূরেই সোনার দোকানে খুন!

পল্লব হজরা,বরাহনগর: দিনের আলোয় বরাহনগর টবিন রোড এলাকায় একটি সোনার দোকানে নৃশংস খুনের (Baranagar Murder) ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ নিজের দোকানের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় ষাটোর্ধ্ব ব্যবসায়ী শঙ্কর জানা-র হাত-পা বাঁধা মৃতদেহ। এই ঘটনা কলকাতার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, বিশেষত এদিনই যখন NCRB রিপোর্টে শহরকে ‘সবচেয়ে সুরক্ষিত’ ঘোষণা করা হয়েছে।

যেভাবে ঘটল ঘটনা

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বরাহনগর থানার থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত টবিন রোডের ওই সোনার দোকানের মালিক শঙ্করবাবুকে দুপুরের পরে দোকানে একা পেয়েছিল দুষ্কৃতীরা। মৃতদেহের গলা ও মাথায় ধারালো অস্ত্রের গভীর আঘাতের দাগ রয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, লুঠের উদ্দেশ্যে দুষ্কৃতীরা দোকানে ঢোকে এবং শঙ্করবাবু বাধা দেওয়ায় তাঁকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়।

শঙ্করবাবুর ছেলে দোকানে সিসিটিভি বন্ধ দেখে প্রথমে সন্দেহ করেন। এরপরই এলাকার পরিচিত একজনকে দোকানে খোঁজ নিতে পাঠান। সেই সময়ই দোকানের ভিতর শঙ্করবাবুর হাত-পা বাঁধা দেহ দেখতে পান স্থানীয়রা, যেখানে দেওয়ালে রক্তের দাগও লেগে ছিল। দ্রুত খবর দেওয়া হয় বরাহনগর থানায়। পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

তদন্তে পুলিশ ও ফরেন্সিক দল

পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা প্রথমে গ্রাহক সেজে দোকানের ভেতরে ঢোকে। বাইরে আরও দু’জন পাহারা দিচ্ছিল বলে জানা যাচ্ছে। খুনের পরই তারা দোকান থেকে মূল্যবান সামগ্রী লুঠ করে চম্পট দেয়। তবে এই ঘটনায় মোট কতজন যুক্ত, এর পিছনে ব্যক্তিগত পাওনা-সংক্রান্ত কোনো বিবাদ ছিল কি না, সে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার তদন্তে ইতিমধ্যেই দোকানে পৌঁছেছে ফরেন্সিক দল

স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ

এই খুনের ঘটনায় এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, এই এলাকায় একাধিক সোনার দোকান থাকা সত্ত্বেও নিরাপত্তা প্রায় নেই। একজন বাসিন্দা বলেন, “ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর শুনি মারা গিয়েছেন। আমাদের এখানে কোনো নিরাপত্তা নেই। মাঝে মধ্যে পুলিশ আসে, কিন্তু সেই ভাবে টহল কোথায়? এই যদি পরিস্থিতি হয়, আমাদের তো খুব ভয় লাগছে।”

শঙ্করবাবুর মতো পরিচিত একজন ব্যবসায়ীর এমন পরিণতিতে গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। থানা থেকে এত কাছে এমন ঘটনা ঘটায় পুলিশের ভূমিকা এবং এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ দ্রুত দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছে।