খবরএইসময়,নিউজ ডেস্কঃ ব্রিফ কেসে ঠাসা কাগজ নিয়ে বাজেট তিনি আগের বারও পেশ করেননি। সংসদে নিয়ে গিয়েছিলেন খাতা। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের হাতে এ বার সেই খাতাও দেখা গেল না। সোমবার তিনি বাজেট পেশ করলেন ট্যাবের সাহায্যে। ‘পেপারলেস’ হিসাবে ইতিহাসের খাতায় উঠে গেল এ বারের বাজেটের নাম। যদিও এর বাইরে চমক তেমন নেই বলে বিশেষজ্ঞদের মত। বাজেটে যে দিকে আমজনতার নজর থাকে সবচেয়ে বেশি, সেই আয়কর নিয়ে উচ্চবাচ্য করলেন না অর্থমন্ত্রী। তবে ৭৫-এর বেশি যাঁদের বয়স, সেই সব পেনশন প্রাপককে আর আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে না।
কোভিড পরিস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী আয়করে কিছু ছাড় দিয়ে আমজনতাকে খানিক স্বস্তি দেবেন বলে আশা তৈরি হলেও সেই পথে হাঁটেননি সীতারামন। রাজকোষে চাপ না বাড়াতেই তাঁর এই পদক্ষেপ বলে বিশেষজ্ঞদের মত।
তবে দিল্লি সীমানায় কৃষকদের বড় আন্দোলনের মধ্যে কৃষিক্ষেত্রের জন্য কিছু ঘোষণা তিনি করেছেন। চাষিদের পাশে থাকার বার্তা দেন তিনি। রাজ্যে রাজ্যে অবস্থিত মান্ডিগুলিকে ই-গভর্ন্যান্সের সঙ্গে যুক্ত করার কথা জানান। পাশাপাশি, উৎপাদন মূল্যের দেড় গুণ ন্যবনতম সহায়ক মূল্য হিসাবে দেওয়ার ঘোষণাও করেন। যদিও এতে আন্দোলনরত কৃষকদের মন কতটা গলানো যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। বাজেট ঘোষণার পর নেতা রাকেশ টিকাইত বলেন, ‘বাজেটে অর্থমন্ত্রীর এমন কথা বলা উচিত যা চাষিদের সঙ্গে সম্পর্কিত।’
সোমবার লাল পাড় সাদা শাড়ি পরে সংসদে পৌঁছন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। ভাষণের গোড়াতেই উদ্ধৃত করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ভোরের পাখি’র কয়েকটি পঙক্তি। সামনে বিধানসভা নির্বাচন। সেই প্রেক্ষিতে বঙ্গমুখী বাজেটের প্রত্যাশা ছিল রাজ্য বিজেপির নেতাদের। প্রকাশ্যে যদিও এ প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন তাঁরা। আর সোমবার রাজ্যের জন্য ৬৭৫ কিলোমিটার রাস্তার প্রকল্প ঘোষণা করলেন সীতারামন। সে জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা। কলকাতা-শিলিগুড়ি সড়ক পথের উন্নয়নের কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি। এবং উল্লেখযোগ্য ভাবে পশ্চিমবঙ্গের চা-শ্রমিকদের কল্যাণে ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। যদিও সীতারামনের বাজেটকে ‘লক্ষ্যহীন’ বলে বিঁধেছে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাজেট ঘিরে।
করোনা টিকা খাতে অবশ্য মোটের উপর ভালো পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। সীতারামন জানান, ওই খাতে ৩৫ হাজার কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। এ ছাড়া সার্বিক ভাবেই স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বাড়িয়েছেন তিনি।
বেসরকারিকরণের পথেও বেশ কয়েক কদম এগিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। শীঘ্রই আইন বদলে এলআইসি-র আইপিও শুরু হবে আগামী অর্থবর্ষেই।