নিউজ ডেস্ক: পপ তারকা রিহানা থেকে পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ — দিল্লি সীমানায় আন্দোলনরত কৃষকদের সমর্থনে সরব হলেন আন্তর্জাতিক মঞ্চের বিশিষ্টরা। উঠে এল মানবিকতার কথাও। তবে তাতে সরকারের বিশেষ হেলদোল নেই। লাগাতার ব্যারিকেড, কাঁটাতারে আন্দোলনস্থলে জল-শৌচালয়ের মতো নিত্য জরুরি ক্ষেত্রও কৃষকদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এমনিতেই তাঁদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে রাস্তায় বড় বড় পেরেক পুঁতেছে সরকার। তার উপরে ন্যূনতম পরিষেবাতেও আঘাত নামিয়ে আনায় বাড়ছে ক্ষোভ, বিস্ময়ও।
কৃষকরা অবশ্য পিছপা হচ্ছেন না। নেতা রাকেশ টিকাইত জানিয়েছেন, আলোচনার টেবিলে যেতে হলে হেনস্থা করার এই পদ্ধতি ছাড়তে হবে সরকারকে। এত কিছুর পরেও অন্তত অক্টোবর-নভেম্বর পর্যন্ত আন্দোলন জারি থাকবে বলে জানিয়েছে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা (এসকেএম)। এক বিবৃতিতে সরাসরি বিজেপি-আরএসএসের বিরুদ্ধে হেনস্থায় মদত দেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছে তারা।
এ সবের মধ্যেই আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় আন্দোলনরত কৃষকদের সমর্থনে জোরালো হচ্ছে আওয়াজ। আন্দোলনস্থলের ছবি পোস্ট করে পপ তারকা রিহানা প্রশ্ন তুলেছেন — আমরা এ নিয়ে কথা বলছি না কেন?
why aren’t we talking about this?! #FarmersProtest https://t.co/obmIlXhK9S
— Rihanna (@rihanna) February 2, 2021
দিল্লি সীমানায় ইন্টারনেট বন্ধ করা নিয়ে একটি খবর শেয়ার করে গ্রেটা লিখেছেন — ভারতে কৃষক বিক্ষোভের পাশে আছি আমরা।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের ভাগ্নি মীনা হ্যারিসও সামিল হয়েছেন। টুইটে তাঁর বক্তব্য — ইন্টারনেট বন্ধ করে কৃষক আন্দোলনকারীদের উপর আধা-সামরিক হিংসার বিরুদ্ধে আমাদের সকলের সরব হওয়া উচিত। আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের বেশ ক’জন রাজনীতিকও মুখ খুলেছেন।
তিন বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে কৃষকরা অনড়। সরকার সেগুলিকে স্থগিত করার প্রস্তাব দিচ্ছে। কিন্তু সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন কৃষকরা। আপাতত আলোচনার টেবিলে বসার কথা কোনও তরফেই জানানো হয়নি। কিন্তু সরকার যে ভাবে ক্রমাগত অস্থায়ী ব্যারিকেড, সিমেন্টের স্ল্যাব, বিশালাকার পেরেক, কাঁটাতার, ইন্টারনেট বন্ধ করা, ট্রেনের পথ ঘোরানোর মতো পদ্ধতি নিয়ে আন্দোলনস্থলকে দুর্গে পরিণত করে আন্দোলনকারীদের হেনস্থা করছে, তার পরে আলোচনার পথ কতখানি উন্মুক্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।
এ দিকে কৃষক ইস্যু নিয়ে আলোচনার সুযোগ না-মেলায় মঙ্গলবার রাজ্যসভা থেকে ওয়াক আউট করেছিলেন বিরোধীরা। লোকসভাতেও ব্যাপক গোলমাল হয়। তবে বুধবার স্থির হয়েছে, মোশন অফ থ্যাঙ্কস-এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলা যাবে।
এর মধ্যে পাঞ্জাবের প্রধানমন্ত্রী অমরিন্দর সিং দ্রুত সমস্যা মেটানোর উপর জোর দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে ১৯৮৪-র অপারেশন ব্লু স্টার-এর প্রসঙ্গও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।