হাবিব সরোয়ার আজাদ,ঢাকাঃ করোনার করাল গ্রাসে ইতিমধ্যেই সারা বিশ্বজুড়ে বহু মানুষের প্রাণ চলে গিয়েছে।বাংলাদেশেও করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা নেহাত কম নয়। সে কারণেই করোনা ভাইরাস কে প্রতিহত করতে সরকার বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে।তা সত্ত্বেও এখনোও পর্যন্ত করোনাভাইরাস কে বাগে আনা সম্ভব হয়নি। তবে এরই মধ্যে এক ক্ষুদে স্কুলছাত্রী নজির গড়ল বাংলাদেশে।
প্রিয়জনদের থেকে পাওয়া উপহার ও স্কুলের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে মাটির ব্যাংকে জমানো টাকা কর্মহীন, অসহায়, অসচ্ছল ও অভুক্ত মানুষদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্রাণ তহবিলে তুলে দিলেন ঠাঁকুরগাও’র ৩য় শ্রেণীতে পড়া ক্ষুদে স্কুল ছাত্রী।
শনিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. এ কে এম কামরুজ্জামান সেলিমের হাতে সেখানকার সেন্ট মাদার তেরেসা স্কুলের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়া মোছা. মুক্তা আক্তার তার গত দুই বছরের সঞ্চয়কৃত মাটির ব্যাংকে জমানো টাকা দেশের অসহায় দরিদ্রদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে তুলে দেয়।
জেলা প্রশাসক আবেগআপ্লত হয়ে বলেন, ছোট্ট শিশুর মাটির ব্যংকে জমানো টাকা এভাবে অসহায় দরিদ্য মানুষের জন্য দেওয়াটা আমি অনুকরনীয় বলে মনে করছি। তার কোমল হৃদয়ে যে বৈশ্বিক মহামারী করোনার বিষয়টি আঘাত করেছে এবং সে এ ক্রান্তিকালে গরীব অসহায়দের জন্য ভেবেছে এটাই বিশাল বড় পাওয়া। দেশের এই সংকটের মুহুর্তে স্কুল ছাত্রী মুক্তার এই অবদান দেশবাসী সবসময় মনে রাখবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, ওই মাটির ব্যাংকে কী পরিমাণ টাকা রয়েছে তা আমরা আপাতত গুনে দেখিনি, মাটির ব্যাংকসহ প্রধানমন্ত্রীর নিকট প্রেরণ করা হবে, এরপর ওখানে মাটির ব্যাংক ভেঙ্গে গুনলে বুঝা যাবে কী পরিমাণ টাকা জমানো ছিল। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের আব্দুল লতিফ ও গৃহিণী নাসিমা বেগমের একমাত্র শিশু কন্যা মুক্তা। এই সংকটে মেয়ের এমন দানে গর্বিত পিতামাতা।
স্কুল ছাত্রী মুক্তা জানান, আমি বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে দেখেছি গরীব মানুষরা অসহায়ভাবে দিন যাপন করছেন। তারা অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। তাই আমি আমার ২ বছরের টিফিনের জমানো টাকা ও বিভিন্ন সময় উপহারের জমানো টাকা ব্যাংক ভেঙ্গে গুনে দেখিনি পুরো জমানো টাকা মাটির ব্যাংক সহ গরীব মানুষদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দিয়ে দিলাম।
ক্ষুদে স্কুল ছাত্রীর এমন অবদানে অভিভুত ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষজন।তারা বলছেন, এটি যেমন গর্বের তেমনি সমাজের বিত্তবানদের এই সংকটময় মুহুর্তে অসহায় কর্মহীন মানুষজনের পাশে সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান বলেই মনে করছি আমরা।কোমলমতি এই শিশুর দেখানো পথে সমাজের নিম্নআয়ের মানুষজনদের পাশে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।