পল্লব হাজরা, কলকাতা : পশ্চিমবঙ্গ মঙ্গলগ্রহে নয় এই ভারতেরই একটি রাজ্য, অথচ একমাত্র এই পশ্চিমবঙ্গই যেখানে বাংলা বাধ্যতামূলক নয়! রাজ্য সরকারি চাকরির জন্য বাংলা ছেলে মেয়েদের সর্বভারতীয় পরীক্ষার মধ্যে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। ইউপি বিহার থেকে হু হুকরে চাকরিপ্রার্থীরা ডুকছে এই রাজ্যে সরকারি চাকরিতে। বিষয়টি খুবই লজ্জার এবং বাংলার ছেলে-মেয়েদের কাছে অত্যন্ত দুঃখজনক।
উড়িষ্যায় উড়িয়া বাধ্যতামূলক পেপার, মহারাষ্ট্রের মারাঠী, কর্নাটকে কন্নড় ,কেরালা মালায়ালাম, তামিলনাডুতে তামিল, তেলেঙ্গানায় তেলেগু , ছত্রিশগড়ে বিহারী- হিন্দি, পাঞ্জাবে পাঞ্জাবি এমনকি গুজরাটে গুজরাটি। ফলে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে একটা হতাশা কাজ করে আজকাল। তাঁদের মধ্যে আজকাল বদ্ধ ধারণা জন্মেছে এই নিয়ে যে, এর ভিতরে যারা চাকরি করেন অর্থাৎ যারা এর নীতিনির্ধারক তারা হয়তো ইউপি বিহারের পাবলিক সার্ভিস কমিশনে চাকরি করছেন!
তবে, এই মুহূর্তে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভুমিকায় দেখা যাচ্ছে বাংলাপক্ষ’কে এবং বলা যেতেই পারে যে, বাংলাপক্ষই একমাত্র বাংলার জাতীয় সংগঠন। তারাই বিগত তিন বছর ধরে গর্গ চ্যাটার্জির তত্বাবধানে বাংলার রাজ্য সরকারি বা বেসরকারি চাকরিতে রাজ্যের ভূমিপুত্র সংরক্ষণ করার পাশাপাশি বাংলার প্রতিটি রাজ্য সরকারি চাকরিতে বাধ্যতামূলক ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া এবং WBCS মেইনস যাতে শুধুমাত্র ইংরেজিতে না হয়ে, বাংলাতেও হয় সেই দাবি দাবি জানিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে যার অন্যথা হলনা শুক্রবার।
১লা এপ্রিল,শুক্রবার কলকাতার মুদিয়ালিতে পিএসসি (PSC) ভবনের সামনে বাংলার প্রতিটি রাজ্য সরকারি চাকরিতে বাধ্যতামূলক ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া, WBCS মেইনস যাতে শুধুমাত্র ইংরেজিতে না হয়ে, বাংলাতেও হয় সেইসব দাবি নিয়ে সকাল সাড়ে ১০ থেকে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে এবং পিএসসি চেয়ারম্যান পিয়ালী সেনগুপ্তের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি তুলে দেন।
এদিনের এই বিক্ষোভে সামিল ছিলেন বাংলাপক্ষের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক গর্গ চট্টোপাধ্যায়, বাংলা পক্ষের শীর্ষ পরিষদের সদস্য কৌশিক মাইতি এবং শীর্ষ পরিষদ সদস্য মনন মন্ডল সহ বাংলা পক্ষের বিভিন্ন জেলার সহযোদ্ধারাও এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন। পিএসসি চেয়ারম্যানের তরফে জানানো হয়েছে, এই দাবি তিনি সরকারের কাছে এবং মূখ্য সচিবের কাছে পাঠানো হবে।
বাংলা পক্ষের তরফে জানানো হয়েছে যতদিন না পর্যন্ত ১০০ নম্বরের বাংলা ভাষার পরীক্ষা রাজ্য সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক হয় ততদিন এই আন্দোলন চলবে এবং আগামী দিনের আন্দোলন আরো জোরদার হবে। দরকারে সংগঠনের তরফে নবান্ন অভিযান হবে, কারণ আইন বানায় সরকার। পিএসসি সেটা বলবৎ করে।