নিজস্ব প্রতিনিধি, ব্যারাকপুরঃ অতিমারি করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কেন্দ্র গোটা দেশে লকডাউন ঘোষণা করেছে।এই লকডাউন বাদ যায়নি বঙ্গেও। সারা দেশের মত এরাজ্যের মানুষও গৃহবন্দী হয়ে পরেছেন। কাজ নেই ,নেই কোনও আয়ের ব্যবস্থা, ঘরে নেই খাবারের যোগান । এমতবস্থায় ভাটপাড়া পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পুর-পারিষদ হিমাংশু সরকারের নেতৃত্বে তৃণমূল কর্মীরা দেবী অন্নপূর্ণার আবাহন শুরু করে। নিরত অন্নপ্রয়াদিনী ও ভবদুঃখহন্ত্রী দেবী পার্বতী ভিক্ষারত শিবকে অন্নপ্রদান করে অন্নপূর্ণা নাম প্রাপ্ত হন। হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী,দেবী অন্নপূর্ণার পূজা করলে গৃহে অন্নাভাব থাকে না। সেই বিশ্বাসকে সম্বল করে, এই লকডাউনে গৃহবন্দী থাকা অসহায় মানুষদের মুখে অন্ন তুলে দিতে অন্নপূর্ণা কমিউনিটি কিচেনের ব্যবস্থা শুরু করে হিমাংশু বাবুরা। শ্যামনগর যুগের প্রতীক খেলার মাঠের পাশে বিদ্যুৎ গাঙ্গুলী মুক্ত মঞ্চে, স্বাস্থ্য বিধি মেনে বিশালাকার জায়গায় তাবু খাঁটিয়ে রান্নার ব্যবস্থা করা হয়।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যেখানে মহিলা ,সেখানে তাঁর দলীয় মহিলাকর্মীরা কতটা কর্মঠ হতে পারেন তাঁর প্রমান মিলল এই ‘অন্নপূর্ণা কমিউনিটি কিচেনে।’ সবজি কাটা থেকে রান্না করা এমনকি রান্না করা খাবার প্যাকেট করা পর্যন্ত দায়িত্ব নেন দলের মহিলাকর্মীরা। খাবারের মেনুতে থাকে ভাত,ডাল,সবজি, আলু-সয়াবিনের তরকারি এবং ডিম। শুরুর প্রথম দিনই প্রায় পনেরশো নিরন্ন মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেন তাঁরা। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের এই ‘অন্নপূর্ণা কমিউনিটি কিচেন’ এর কথা শুনে পাশাপাশি অন্যান্য ওয়ার্ডের মানুষেরা আসতে শুরু করে।
শেষমেশ দ্বিতীয় দিন থেকেই ২ হাজার লোকের রান্নার ব্যবস্থা করা হয় এবং সেখানে কুপনের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি প্রশাসনিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাড়িতে বাড়িতে দলের যুব কর্মীরা রান্না করা খাবার পৌঁছে দেন বলে জানান হিমাংশু বাবু । দীর্ঘ দিন এইভাবে ‘অন্নপূর্ণা কমিউনিটি কিচেন’ চালানোর পর আজই শেষ দিন বলে জানালেন কাউন্সেলর হিমাংশু সরকার।
কিন্তু কেন বন্ধ করলেন জানতে চাইলে তিনি জানান, আপনারা নিশ্চই জানেন যে, ‘আমাদের নেত্রী মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, কেউ যাতে নিরন্ন না থাকেন, সেই জন্য রাজ্যের সমস্ত মানুষের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। ডিজিটাল রেশনকার্ড ছাড়াও বড় কার্ডেও যাতে রেশন পান এমনকি যাদের রেশন কার্ডই নেই তাদেরও রেশনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমরা আজ প্রত্যেক বাড়িতেই রেশনের নিশ্চয়তা জেনেই বন্ধ করছি আমাদের ‘অন্নপূর্ণা কমিউনিটি কিচেন’।’ তবে, তৃণমূলের সমস্ত কর্মীদের,বিভিন্ন ক্লাব- সংগঠন এবং যে সমস্ত সহৃদয় ব্যক্তিরা এই ব্যবস্থাপনায় অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছেন তাঁদেরকে কৃতঞ্জতা জানাতে ভোলেন নি হিমাংশু বাবু।