সঞ্জয় কাপড়ী, পূর্ব মেদিনীপুর: রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তে জগন্নাথের স্নানযাত্রা হলেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলে তা হয় না। কেন হয় না?। মহিষাদলের প্রাচীন রথে অধিষ্ঠিত হন মহিষাদল রাজবাড়ীর কুলদেবতা গোপালজিউ। সাথে থাকেন জগন্নাথ দেব। তাই মহিষাদলে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা হয় না। তবে রথযাত্রাকে ঘিরে প্রস্তুতি তুঙ্গে। সর্ব ধর্ম সমন্বয়ে এই রথযাত্রা পালির হয়। সব ধর্মের মানুষরা যুক্ত থেকে রথ পরিচলন করা হয়। করোনা পরিস্থিতি বদলেছে।
তাই দু’বছরের অবসর কাটিয়ে এবার গড়াতে চলেছে মহিষাদল রাজবাড়ীর রথের চাকা। যদিও গত দুবছর নিয়ম রক্ষার্থে পালকিতে চেপে এক কিলোমিটার দূরের মাসির বাড়ি গুন্ডিচাবাটি তে গিয়ে ছিলেন জগন্নাথ দেব। আবার উল্টো রথের দিন ফেরতও এসে ছিলেন। তবে সেই জাঁক জমক পূর্ণ ব্যাপার ছিল না। তবে এবার হবে। কিন্তু তার মাঝেই এক সমস্যা দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, রথযাত্রা বন্ধ থাকার সুযোগ নিয়ে রথ- সড়কের জায়গায় দখল দারি শুরু হয়েছে।
যদিও পূর্ব মেদিনীপুরের প্রশাসন থেমে নেই। সমস্যা সমাধানে তৎপর তারা। ইতি মধ্যেই শুরু করেছে মাইকিং। অন্য দিকে, রাজ বাড়ী ও রথ পরিচলন কমিটির তরফেও প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। রথের কাঠামো সাজানো হচ্ছে। শিল্পী ও শ্রমিকরা ইতিমধ্যেই রথ সংস্কারের কাজে হাত লাগিয়েছেন। নতুন করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে এই ঐতিহ্যবাহী রথ।
দু’ বছর বন্ধ থাকার পর নতুন করে রথ যাত্রার প্রস্তুতি শুরু হওয়ায় খুশি এলাকার মানুষ। প্রসঙ্গত, মহিষাদল রাজবাড়ির রথযাত্রা এ বার ২৪৭ তম বছরে পা দিল। শোনা যায়, ১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে এই রথযাত্রার প্রচলন করে ছিলেন রানি জানকী দেবী। ১৭৩৮ সালে মহিষাদলের রাজা হন তৎকালীন যুবরাজ আনন্দলাল উপাধ্যায়। ৩১ বছর রাজত্ব করার পর তিনি মারা গেলে রাজ্যের দায়িত্ব নেন তাঁর পত্নী জানকী দেবী। এবং ১৭৭৬-এ রথযাত্রার সূচনা করেন। তারপর থেকেই বংশানুক্রমে এই রথ যাত্রা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।