পল্লব হাজরা, দক্ষিণেশ্বর: শক্তির আরাধনায় গা ভাসিয়েছে গোটা বাংলা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কালীক্ষেত্রগুলিতে ভক্তদের ভিড় । গত দুবছর করোনার বিধিনিষেধ কিছুটা আলগা হতে পুরণার্থীদের সমাগম দক্ষিণেশ্বর ভবতারিণী মন্দিরে। সকাল থেকে বিশেষ পুজো সহ ভোগ আরতি চলে মন্দির গর্ভগৃহে। দীপান্বিতা অমাবস্যায় দেবীকে সোনার অলংকারে সাজিয়ে তোলা হয়। ঘরোয়া ভঙ্গিতে পরানো হয় বেনারসী শাড়ি। এ বছর দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের পুজো ১৬৮ তম বছরে পদার্পণ। ১৮৫৫ সালের ৩১ মে স্নানযাত্রার দিন এই মন্দিরের আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠা করেন রানি রাসমণি। একসময় পশুবলি প্রথা চালু থাকলেও শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেবের নির্দেশে তা বন্ধ হয়।
সোমবার সকাল থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তদের আনাগোনা দেখা যায় শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণদেব স্মৃতি বিজড়িত দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে। ফল মিষ্টি শাড়ি দিয়ে পুজো দেন বহু ভক্ত। এদিন সকাল থেকে আকাশের মুখ ছিল ভার। বেলা গড়াতে ঘূর্ণিঝড় সিতরাং এর প্রভাবে চলে ঝোড়োহাওয়ার দাপট সাথে বৃষ্টিপাত যার জেরে ভক্তদের ভিড়ে কিছুটা ভাটা পড়লেও রাত বাড়তে ফের চেনা ছন্দে ফেরে দক্ষিণেশ্বর মন্দির চত্বর। রাত ১০টায় গঙ্গায় চাঁদনি ঘাটে জোয়ারের জল ঘটে করে নিয়ে মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। শুরু হয় মাতৃ আরাধনা। চার প্রহরে ষোড়শোপচারে আরাধনার সাথে ঐতিহ্য মেনে দেবীকে ভোগে দেওয়া হয় অন্ন, পাঁচ রকম মাছ, পাঁচ রকম ভাজা, ঘি-ভাত, পাঁচ রকম মিষ্টি ও দই ।.
বাংলাদেশ দিনাজপুর থেকে আগত আদুরীরানি জানান, দীর্ঘদিনের ইচ্ছে দক্ষিণেশ্বরে এসে মা ভবতারিণীকে পুজো দেওয়ার। প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা দূরে ঠেলে দিয়ে তাই সপরিবারে ভক্তিভরে দেবীকে দর্শন ও ফল মিষ্টি দিয়ে পুজো দেওয়া।
এদিন রঙিন আলোর রোশনাইতে সাজিয়ে তোলা হয় মন্দির চত্বর। মন্দির প্রাঙ্গনে বড়ো পর্দায় মায়ের আরতি থেকে নিত্য পুজোর ভক্তদের দেখার ছিল বিশেষ সুযোগ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিসিটিভি ক্যামেরার চলে নজরদারি। মন্দিরে প্রবেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ছিল আটোসাটো। প্রাকৃতিক দুর্যোগকে দূরে সরিয়ে দেবী দর্শনে খুশি পুরনারথিরা।