খবরএইসময়, নিউজ ডেস্ক: বিশ্ববাজারে আদানি শিল্পগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক অবস্থা দেখে হইচই শুরু হয়েছে দেশজুড়ে। আদানির এই অর্থনৈতিক অবস্থা দেখে তাজপুর বন্দর নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বিজেপির (BJP) শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
শুভেন্দু বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আদানির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক সবাই জানে। তাই এই ব্যাপারে আমি কিছু বলব না। কিন্তু আমার চিন্তা তাজপুর বন্দর নিয়ে। সেখানে যে ২৫ হাজার কোটি বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছিল। ১০ লাখ চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতির এবার কী হবে?
শুভেন্দু বাবু আদানি শিল্পগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক অবস্থা দেখে একটি টুইট করেও তাঁর উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেন।
গত ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তাজপুরে বন্দর তৈরির বরাত পায় আদানি গোষ্ঠী। সমুদ্র বন্দর তৈরিতে সব মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানায় রাজ্য সরকার। এতে প্রত্যক্ষ ভাবে ২৫ হাজার কর্মসংস্থান হবে বলেও জানানো হয়। মূল প্রকল্পের সঙ্গে ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে এবং দুই মেদিনীপুরের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে বলেও জানান খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এই তাজপুর বন্দর নিয়ে গোড়া থেকেই কটাক্ষ করে আসছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এখন বিশ্ববাজারে আদানির অর্থনৈতিক অবস্থা দেখে আরও একবার কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন শুভেন্দু ২৫০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার কথা ছিল, তারএখন কী হবে?
প্রসঙ্গত, পূর্ব মেদিনীপুরে তাজপুর বন্দর ও বীরভূমে ডেউচা পাঁচামির খনি প্রকল্পে বিনিয়োগ করার কথা আদানি গোষ্ঠীর (Adani Group)। এখানে প্রচুর পরিমাণে গ্রানাইট পাথর থাকায় আগ্রহ দেখিয়েছে এই শিল্পগোষ্ঠী। কৃষিভিত্তিক শিল্পেও আগ্রহ রয়েছে আদানিদের। বর্তমানে তাজপুরে চলছে সমীক্ষার কাজ। এসবের জেরে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে আদানিদের উপস্থিতি বড় করে তুলে ধরা হয়েছিল রাজ্য সরকারের তরফে। তবে বর্তমানে আদানিদের বিপর্যয়ের খবর প্রকাশ্যেই প্রমাণ গুণছে তৃণমূল। এদিন শুভেন্দু বলেন, আমি ভাবিত আমাদের তাজপুর গভীর সমুদ্র বন্দর নিয়ে। আমি ভাবিত ডেউচা পাঁচামির পাথর কে কিনবে, তাই নিয়ে। তিনি বলেন, ভাইপো নতুন বন্ধু নিয়ে এসেছিল। এ বার নির্বাচনী বন্ড কোথা থেকে আসবে?
তবে এই প্রথম নয়, আদানি (Adani Group) প্রসঙ্গে এর আগেও রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছিলেন শুভেন্দু। নিউ টাউনের ইকোপার্কে গৌতম আদানির পুত্র কিরণ আদানির হাতে তাজপুর বন্দরের কাজ শুরুর অনুমতি তুলে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়ও সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন শুভেন্দু। তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, রাজ্য সরকার তো নীতিগতভাবে বেসরকারি সংস্থার জন্য জমি অধিগ্রহণের বিরোধী। তাহলে পাঁচ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করবে কে? সেই সময় তিনি এও বলেছিলেন, একেবারে ঢপের চপ। আমি বারে বারে বলি একটি গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরি করতে গেলে যেখানে লক গেট হবে, তার পাশে ন্যূনতম পাঁচ হাজার একর জমি লাগে। চার লেনের জাতীয় সড়কের পাশাপাশি রেলের লাইন লাগে। রেললাইন হল না, জাতীয় সড়কের কাজও তো শেষ হল না।