পল্লব হাজরা, দক্ষিণেশ্বর: আদ্যাপীঠ বর্তমান যুগে বিশ্বের দরবারে এক কালজয়ী দিব্য পবিত্র পীঠস্থান। এই মহাপীঠের প্রাণ পুরুষ শ্রীমৎ অন্নদাঠাকুর হলেও পীঠস্থানের রূপক ও পরিচালনক হলেন স্বয়ং শ্রীরামকৃষ্ণদেব। ১৩২৭ সনে বাসন্তী রামনবমী পুণ্য তিথিতে অন্নদাঠাকুর কুমারী পূজার প্রথম প্রচলন করেন।
জানা যায় ১৩২৭ সনের পুন্য প্রভাতে ২৮ টি আসন, ২৮টি পূজার থালায় ২৮টি কুমারীকে আদ্যামা জ্ঞানে পূজিত হয়েছিলেন। পুজোর শেষে দেখা যায় ২৯টি আসন । ভক্তমুখে প্রচলিত ঠাকুর ভাবাবস্থায় কাউকে কিছু না জানিয়ে মায়ের নির্দেশের অপেক্ষা করছিলেন। আদ্যামা ঠাকুরের নরশরীরকে দিয়ে জীবনের ঐহিক পারত্রিক কাজ সম্পন্ন করবেন। তাই মা আদ্যামা রূপে না এসে কুমারী রূপে কুমারী রূপে পুজো গ্রহণ করেন। অন্নদাঠাকুরের এই কুমারী পুজোর উদ্দেশ্য ছিল আধ্যাত্মিক দিক থেকে সকল জীবের মধ্যে মাতৃরূপদর্শন। পরিবার, দেশ ও বিশ্বের কল্যাণে তিনি কুমারী পুজোর মাধ্যমে নারী শক্তির উদ্বোধন করেছিলেন। ১৩২৭ সনের পর থেকেই প্রতিবছর এই পুজো হয়ে আসছে আদ্যাপীঠে।
দক্ষিণেশ্বর রামকৃষ্ণ সংঘ আদ্যাপীঠের সাধারণ সম্পাদক ব্রহ্মচারী মুরাল ভাই জানান ,”অন্নদা ঠাকুর এই কুমারী পুজো চালু করেছিলেন। ১০৮ বছর ধরে চলে আসছে কুমারী পুজো। আগত প্রতিটি কুমারী আদ্যামা রূপে পুজিত হন। ২০০০জন কুমারীকে আজ পূজিত হচ্ছেন। আজকের দিনে ভক্তরা যা চাইবে তাই পাবেন এমনটাই অন্নদা ঠাকুর বলে গিয়েছিলেন। একটি কুমারী মেয়ে যা কিছু খেতে পছন্দ করে তাই তাদেরকে নিবেদন করা হয়। দ্বিপ্রহবে রয়েছে কুমারীদের জন্য বিশেষ ভোগের ব্যবস্থা”।
পুজোয় আগত কুমারী পূর্বাশা প্রামানিক জানান ‘আজ কুমারী পুজো উপলক্ষ্যে আসা। সকলের মঙ্গল হোক পুজোর পর সকলকে এমনটাই আশীর্বাদ করেছি । ফুল, ফল, মিষ্টি দিয়ে পুজো করা হয়েছে।’
আদ্যাপীঠে কুমারী পুজোর সাথে সাথে পূজিত হন দেবী বাসন্তী। কুমারী পুজোকে কেন্দ্র করে চলে বিশেষ উপাচার। সকাল থেকেই বহু দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্তের ঢল নামে মন্দির প্রাঙ্গণে। উৎসবকে ঘিরে পুলিশি নিরাপত্তা ছিল লক্ষণীয়।