খবর এই সময় ডেস্ক : মঙ্গলবার দুপুরে যখন কর্ম ব্যস্ততায় মানুষ, ঠিক ১২টা নাগাদ কান ফাটা শব্দে কেঁপে উঠল পূর্ব মেদিনীপুর এগরার খাদিকুল গ্রাম। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমত তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় গ্রামবাসীদের মধ্যে।
কোন কিছু বুঝতে না বুঝতেই দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখে গ্রামবাসীরা। বাতাসে বারুদের গন্ধ মিলতেই আর দেরি না করে যে যার মত ছোটাছুটি শুরু করে দেয়। গ্রামের মানুষ বাজি কারখানায় যে বিস্ফোরণ হয়ে আগুন লেগেছে তা দেখতে পেয়ে কিছুটা এগোতেই গ্রামবাসীরা দেখতে পান বিস্ফোরণের জন্য জেরে এদিক ওদিক ছিটকে রয়েছে ঝলসানো দেহ। ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছুটা দূরে রক্তাক্ত অবস্থায় পরে থাকতে দেখা যায় একাধিক দেহ । খবর পেতেই ঘটনা স্থলে আসে পুলিশ ও দমকল। মাটিতে পরে থাকা দেহ গুলিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। পুলিশ সূত্রে খবর বিস্ফোরণের ফলে ইতিমধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহতের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ৭ জন। উদ্ধার কাজ এখনও চলছে অঞ্চল জুড়ে।
অগ্নিদগ্ধ বাজি কারখানাটি অবৈধ হওয়ায় গ্রামবাসীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ। তবে বাজির আড়ালে বোমা তৈরি হত কি না তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে এগরা থানায় পুলিশ বাহিনী। এদিকে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট আসন্ন। তাই ভোটের আগে বোমা তৈরি হত নাকি কৃষ্ণপদ বাগের কারখানায় শুধু বাজি তৈরি হত নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। তবে সবদিক খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ।
দিনে দুপুরে গ্রামে এই বিস্ফোরণে সাধারণত মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন। নিরাপত্তা নিয়ে গ্রামবাসীদের এক অংশে শুরু হয়েছে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। পুলিশকে সামনে পেয়ে বিক্ষোভ উগড়ে দেয় গ্রামবাসীরা।
এদিকে দুপুরে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিস্ফোরণে মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গত বছর ১৯ অক্টোবর এই অবৈধ বাজি কারখানার মালিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে মামলায় জামিন পেয়ে যায় তিনি। এই অঞ্চলে একাধিক জায়গায় বাজির কারখানা গড়ে উঠেছে। উড়িষ্যার সীমান্তবর্তী অঞ্চল হওয়ায় বাজি উৎপাদন করে সহজেই উড়িষ্যায় চালান করা হত বাজি গুলিকে। তবে নাকা তল্লাশি চালিয়ে প্রত্যেক অবৈধ বাজি কারখানা বন্ধ করা হবে। দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা কর্মসংস্থানের জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা অনেকেই এই কারখানার উপর নির্ভরশীল। ঘটনায় ৫জনের মৃত্যু এবং ৭ জন আহত হয়েছে। নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে সরকারের পক্ষ থেকে আড়াই লক্ষ টাকা এবং আহত পরিবারের হাতে ১ লক্ষ টাকা তুলে দেওয়া হবে। বিস্ফোরণের ঘটনার পিছনে ঠিক কি কারণ তা তদন্ত করবে সিআইডি। আজকের ঘটনার পর অবৈধ বাজি কারখানার মালিক পলাতক হলেও দ্রুত পুলিশ গ্রেফতার করবে। পরবর্তী সময় এগরা থানায় আই সি কে তলব করা হবে বলেও জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অপর দিকে এই ঘটনার পিছনে এগরার থানার আইসি কে দ্বায়ী করেন শুভেন্দু অধিকারী। অভিযুক্ত মালিকের সাথে পুলিশের টাকা বিনিময় হত বলে এমনটাই টুইট করেন বিরোধী দলনেতা।
This is the IC of Egra; Mr. Mousam Chakraborty.
He is the one to be blamed for today's horrific incident. The Mamata Police cadre was on the payroll of the perpetrator Krishnapada Bag.
Mamata Police personnel Surajit Sinha & Biswajit Maity acted as emissary between the two. They… pic.twitter.com/sXwru24OGi— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) May 16, 2023