সৌভিক সরকার,বনগাঁঃ অমানবিক হত্যাকাণ্ড উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গাইঘাটায়। রাতের অন্ধকারে বাড়ির সামনেই গলার নলি কেটে,এলোপাথাড়ি কুপিয়ে খুন এক ব্যবসায়ীকে। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় গাইঘাটা থানার পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।
এদিকে এই ঘটনা জানাজানি হতেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। জানা গিয়েছে, ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এর আগে গরু ও মাদক পাচারের মতো বেআইনি কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। ফলে তাঁকে এইভাবে খুন করার ঘটনায় শুরু হয়েছে একাধিক জল্পনা।
পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাত ১০ টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটা থানার ঝাউডাঙা পঞ্চায়েতের কাহনকিয়া এলাকায়। মৃতের নাম বিধান সরকার(৬০)। মাহিশাকাঠি বাজারে তাঁর একটি মাছের খাবার ও একটি ফার্নিচারের দোকান রয়েছে। অন্যান্য দিনের মত বৃহস্পতিবার রাতেও দোকান বন্ধ করে বিধানবাবু মোটর সাইকেলে করে বাড়িতে ফিরছিলেন। বাড়ির সামনে এসে দাঁড়াতেই অতর্কিত হামলা হয় বিধানবাবুর উপর।
বিধান বাবুর ছোট ছেলে রাজা সরকার জানিয়েছেন, বিধানবাবু ফেরার পর মোটর বাইক বাড়ির সামনে গ্যারেজে রাখেন। সেই শব্দও পান সকলে। কিন্তু তারপর বেশ খানিকটা সময় কেটে গেলেও তিনি ঘরে না আসায় তাঁকে খুঁজতে শুরু করেন ছেলেরা। বাড়িতে থাকা পোষা কুকুরটি চিৎকার করতে থাকলে তারা বাইরে বেড়িয়ে দেখেন বাড়ির সামনের রাস্তার উপর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন বিধান সরকার। গলায় আঘাতের চিহ্ন, মুখে মাফলার জড়ানো রয়েছে।
সাথে সাথে খবর পাঠানো হয় পুলিশে।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে গাইঘাটা থানার পুলিশ।পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে প্রথমে চাঁদপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়।সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁর মাথায়, গলায় ও পায়ে একাধিক ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ সূ্ত্রে খবর, অতীতে গরু পাচার, মাদক পাচার-সহ একাধিক বেআইনি কারবারের সঙ্গে যুক্ত ছিল বিধান।বছর কয়েক আগে মাদক পাচারের অভিযোগে তাঁকে গাইঘাটা থানার পুলিশ গ্রেপ্তারও করেছিল।তবে সম্প্রতি তিনি সমাজসেবায় ব্রতী হয়েছিলেন।এলাকার গরিব মানুষদের আর্থিকভাবে সাহায্যও করতেন বলে জানা গিয়েছে।
সম্প্রতি রাজ্যে কয়লা ও গরু পাচারের কিনারা করতে অতি সক্রিয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।ফলে এই মুহূর্তে বিধান সরকারের মৃত্যুর ঘটনা বেশ গুরুত্ব সহকারেই দেখা হচ্ছে।পুরনো শত্রুতার জেরে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে।ইতিমধ্যে একজনকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদও শুরু করছে বলে খবর।তবে বিধানবাবুর পুরনো ব্যবসার সাথে জড়িত কোনও পুরনো শত্রুতা এই ঘটনায় জড়িত কি না তাও খতিয়ে দেখছে বনগাঁ পুলিশ জেলার পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।এলাকায় রয়েছে থমথমে পরিস্থিতি।