পশ্চিমবঙ্গসহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলিকে কেন্দ্র করে সক্রিয় হয়ে উঠছে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি (Terrorists)। গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, পশ্চিমবঙ্গ-অসম সীমান্ত থেকে মাত্র ৫১ কিলোমিটার দূরে (Terrorists) এবং আলিপুরদুয়ার শহর থেকে ৮৭ কিলোমিটার দূরত্বে, অসমের কোকরাঝাড়ে জঙ্গি সংগঠন (Terrorists) ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’ (এবিটি) একটি অস্থায়ী ঘাঁটি (Terrorists) তৈরি করেছিল। সেখান থেকেই বাংলায় নাশকতার (Terrorists) ছক কষা হচ্ছিল।
‘জঙ্গি তৈরির কারখানা’ আবিষ্কার
অসম পুলিশের সাম্প্রতিক অভিযানে কোকরাঝাড়ের একটি নদীর চরে আবিষ্কৃত হয়েছে এই ঘাঁটি। বাঁশ ও ত্রিপলের তৈরি কাঠামোর মাধ্যমে এখানে সন্ত্রাসবাদীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল। প্রশিক্ষণ অন্তর্ভুক্ত ছিল আগ্নেয়াস্ত্র চালানো, অত্যাধুনিক আইইডি তৈরি এবং ব্যবহার। সূত্রের দাবি, এই ক্লাস বেশ কয়েক মাস ধরে চলেছে। তবে, পুলিশের অভিযানের পর ঘাঁটি পরিত্যক্ত হলেও এখনও কিছু কাঠামো রয়ে গেছে।
নদীর চরকে প্রশিক্ষণের কেন্দ্র
অসমের নামাপাড়ার কাছে গৌরাঙ্গ নদীর চরের বিশেষ অবস্থানের সুযোগ নিয়েছিল এবিটি। বছরের ছ’মাস চরটি জলমগ্ন থাকলেও বাকি সময় এটি দৃশ্যমান। গোয়েন্দাদের মতে, এই অস্থায়ী চরকেই ‘জঙ্গি তৈরির ক্লাসরুম’ হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছিল।
গ্রেফতার ও প্রধান অভিযুক্ত
গত দুই সপ্তাহে অসম, কেরালা এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে এবিটির ১২ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে অন্যতম নূর ইসলাম মণ্ডল, যাকে এই ঘাঁটির প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে, তদন্তকারীরা মনে করছেন, নূর একাই এই প্রশিক্ষণ পরিচালনা করত না, আরও জঙ্গি নেতারা থাকতে পারে।
পরিস্থিতি ‘নিরাপদ নয়’ বলে আশঙ্কা
গোয়েন্দা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, বাংলার সীমানা লাগোয়া অঞ্চলে জঙ্গি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার চেষ্টা এখনও চলছে। অসম, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গের সীমানায় সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে পুরো অঞ্চলে নাশকতার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
বাংলা-অসম সীমান্তে নতুন নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ
এই ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, পশ্চিমবঙ্গ এবং অসমের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে নজরদারি আরও বাড়ানো জরুরি। গোয়েন্দাদের মতে, ‘নিশ্চিন্ত থাকার সময় এখনও আসেনি’। তদন্তে উঠে আসা তথ্যের ভিত্তিতে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলির একযোগে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
এই ঘটনার পর দেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে সন্ত্রাসবাদ দমনে আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গোয়েন্দাদের এই তথ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।