একুশের মঞ্চে ছাব্বিশের প্রস্তুতির বার্তা তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Abhishek Banerjee) গলায়। শুরু থেকে শেষ অবধি দফায় দফায় কড়া আক্রমণ বিজেপিকে। তবে শুধু বিরোধীদেরই নয়। দলের ভিতরেও ‘শুদ্ধিকরণে’ মন দিচ্ছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। দিলেন বড় ইঙ্গিত। সাফ বললেন, “যাঁরা ভাবছেন আমরা আমাদের নির্বাচনে কাজ করব, বাকি নির্বাচনে পার্টি বুঝে নেবে তাঁদের বলব একটাই কথা। এই যে এক দেড় মাস আমাকে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আমাকে দেখেননি। কারণ আমি পর্যালোচনার কাজে ব্যস্ত ছিলাম। এর ফল আপনারা দেখবেন।”
লোকসভা নির্বাচনে ২৯ আসনের বড় জয় এলেও একাধিক আসনে অল্প ব্যবধানে পিছিয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে ঘাসফুলের প্রার্থীদের। হেরেওছেন অনেক আসনে। আর সেই পরাজয়ের ময়নাতদন্তে দলের একটা বড় অংশের নেতা-কর্মীদের ‘দোষ’ খুঁজে পেয়েছেন অভিষেক (Abhishek Banerjee)। এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের। সে কারণেই খুব সম্ভবত অভিষেক বলছেন, “যাঁরা, এই নির্বাচনে পঞ্চায়েত বা কাউন্সিলর বা চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান পদে থেকেও মানুষকে বোঝাতে সফল হননি। আমরা সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। কাউকে রেয়াত করা হবে না। আমি যে কথাগুলো বললাম, গ্রামে ফিরে সবাইকে বলবেন।”
একইসঙ্গে চব্বিশের একুশের মঞ্চ থেকে ছাব্বিশের রূপরেখাও তৈরি করে দিতে দেখা গেল অভিষেককে। স্পষ্ট বার্তা, “আমাদের ছাব্বিশের জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। পুরসভায় যাঁরা দায়িত্বে আছেন, পঞ্চায়েতে যাঁরা দায়িত্বে আছেন তাঁদের কর্মীদের কথা ভাবতে হবে। নিজের কথা ভাবলে চলবে না। আমি আপনাদের বলছি বিভিন্ন জায়গায় পর্যালোচনা বৈঠক করতে গিয়েছি। আমি বলেছি দল কিন্তু ফলের পর কার কী ভূমিকা ছিল সেটা খতিয়ে দেখবে।”
এরপরই দলের একাংশের নেতা-কর্মীদের উপর খানিক ক্ষোভ উগরে দিয়ে অভিষেক বলেন, “পুরসভা নির্বাচনে আমি টিকিট পাব। আমার ওয়ার্ড থেকে আমি জিতব। আর লোকসভা, বিধানসভায় দল আশানরূপ ফল করবে না! তাহলে দল আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সে আপনি যত বড় নেতার ছত্রছায়াতেই থাকুন না কেন! পঞ্চায়েতে আপনি টিকিট পাবেন।” এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন, “আপনি পঞ্চায়েতের প্রধান, উপ প্রধান হবেন। আর বিধানসভা, লোকসভা নির্বাচনে ভাববেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসবেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আসবেন, একটা মিটিং করবে। প্রার্থী জিতবে! গায়ে-গতরে আপনি যে পরিশ্রম আপনার নির্বাচনে করেন সেটা প্রতিটা নির্বাচনে করতে হবে। কারণ এটা শুধু তৃণমূলের সৈনিক বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই নয়। এটা বাংলার ১০ কোটি মানুষের সম্মানের লড়াই।”