মঞ্চে ৮০০ ছাত্রছাত্রী। প্রায় অসাধ্য সাধনই বলা চলে। স্কুলের প্রতিষ্ঠা দিবসে এমনই এক ছকভাঙা অনুষ্ঠানের সাক্ষী রইল কলকাতার সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়াম। ছাত্রছাত্রীরা যাতে ছবি আঁকা, নাচ-গান-নাটকে পারদর্শী হয়ে ওঠে সেই ব্যাপারে চিরকালই জোর দিয়ে এসেছে হুগলির রিষড়ার আদিত্য বিড়লা বাণীভারতী স্কুল(Aditya Birla Banibharati School)। লেখাপড়ার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের নান্দনিক মনোবিকাশের সুন্দর দৃষ্টান্ত তারা গড়েছে। তারই একটি ঝলক দেখা গেল স্কুলের ৬৫তম প্রতিষ্ঠা দিবসে।
লেখাপড়ার পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়ে পড়ুয়াদের পারদর্শী করে তুলতে এবং তাদের মানসিক বিকাশ নান্দনিকভাবে করার ব্যাপারে সাহায্য করতে চিরকালই রুটিন পাঠ্যক্রমের বাইরে বেরিয়ে অন্যান্য বিষয়ে সমান গুরুত্ব দিয়ে আসছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান(Aditya Birla Banibharati School)। প্রাথমিক স্তর থেকেই শিল্পকলা, নাচ, গান, আবৃত্তি, নাটক, অঙ্কন সহ নানা বিষয়ে চর্চা ও তা নিয়ে সমান্তরাল পঠনপাঠনে আগ্রহী করে তোলা হয় ছাত্রছাত্রীদের। ছোট বয়স থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত তালিম পেয়ে আদিত্য বিড়লা বাণীভারতী স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী হয়ে উঠতে থাকে। কোন বিষয়ে কার কেমন ট্যালেন্ট, তা খুঁজে বের করেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাই।
স্কুলের অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ে শুক্রবার ৮০০ ছাত্রছাত্রী মঞ্চে উঠে সকলকে অবাক করে দেয়। তাদের সমবেত সঙ্গীত ও নৃত্যানুষ্ঠান সকলের মন কাড়ে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘তাসের দেশ’ নাটকে তাদের অভিনয় দেখে বোঝার উপায় ছিল না তারা পেশাদার মঞ্চাভিনেতা নয়, শুধুমাত্র স্কুলপড়ুয়া।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিল্পী পণ্ডিত তন্ময় বসু, শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপারসন অনন্যা চক্রবর্তী চট্টোপাধ্যায় এবং স্কুলের অধ্যক্ষ গৌতম সরকার। ছিলেন বিশিষ্টজনেরা। অধ্যক্ষ গৌতম সরকার বলেন,
তাদের স্কুলের শ্লোগানই হল এক্সট্রা কারিকুলাম নয়, কারিকুলাম। বর্তমানে পুঁথিগত শিক্ষার পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের মানসিক বিকাশ এবং তাদের ছোট থেকেই কর্মদক্ষ করে তোলার দিকে স্কুলগুলিকে আরও নজর দিতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ দিতে শিল্পী তথা পণ্ডিত তন্ময় বসু ছোটো শিশুদের নিয়ে বাদ্য পরিবেশন করেন, যা শুনে দর্শকরা মুগ্ধ হয়ে যান। শিশুদের মানসিক উন্নতির পাশাপাশি শারীরিক বিকাশে খেলাধূলা ও শরীর চর্চার উপরে জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী চট্টোপাধ্যায়। গৌতম সরকার বলেন, কোনও শিশুর বেড়ে ওঠা এবং তার সার্বিক উন্নয়নের প্রাথমিক ভিত তৈরি হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে। সেই কথা মাথায় রেখেই আমাদের স্কুলে শিশুদের পঠনপাঠনের পাশাপাশি তাদের সাধারণ জ্ঞান, শরীরচর্চা, সাংস্কৃতিক বিকাশের উপর জোর দেওয়া হয়।
উপস্থিত ছিলেন স্কুল সেক্রেটারি অম্লান দাস।