মঙ্গলবার সকালে আহিরিটোলা ঘাটে দুই অভিযুক্তর নৃশংসতার (AhiritolaTrolley Bag Case) চিত্র দেখে শিহরিত হয়েছে গোটা রাজ্য। নীল ট্রলি ব্যাগ খুলতে মৃত পৌঢ়া দেহাংশ দেখে আঁতকে উঠেছিল প্রত্যক্ষদর্শীরা।
মধ্যমগ্রাম: তদন্তের স্বার্থে মঙ্গলবার রাতে দুই অভিযুক্ত মহিলা ফাল্গুনী ঘোষ ও তার মা আরতি ঘোষকে নিয়ে মধ্যমগ্রামের ভাড়া বাড়িতে উপস্থিত হয় নর্থ পোর্ট থানার পুলিশ। সাথে ছিল ফরেনসিক দল। ঘরের ভিতরে তল্লাশির সময় একাধিক জায়গায় মিলেছে রক্তের দাগ। উদ্ধার হয়েছে পিসি শাশুড়ির মাথায় আঘাত করা সেই ইট যা জেরায় আগেই স্বীকার করেছিলেন অভিযুক্তরা। এছাড়া ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে মৃতার আধার কার্ড সহ ভোটার কার্ড। পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে অভিযুক্ত মা ও মেয়ের ব্যবহার করা তিনটি মোবাইল ফোন। তবে খুনের ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কিনা সেই দিকেও নজর রেখে চলেছে তদন্তকারীরা।
জেরায় পুলিশ জানতে পারে, সম্পর্কে ফাল্গুনী ঘোষের পিসি শাশুড়ি হন নিহত সুমিতা দেবী। তিনি থাকতেন অসমের জোড়হাটে। ওই বৃদ্ধার শ্বশুরবাড়ি বর্ধমানের নন্দঘাটে (Nandaghat)। দীর্ঘদিন তাঁর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল না বলে জানতে পারে পুলিশ। সম্প্রতি মধ্যমগ্রামে ঘুরতে এসেছিলেন। গত আড়াই বছর ধরে মধ্যমগ্রাম পৌরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ বীরেশপল্লীতে ভাড়া থাকেন ফাল্গুনী এবং আরতি। কয়েকদিন আগে এক বৃদ্ধাকে ভাড়াবাড়িতে ঢুকতে দেখেছিলেন স্থানীয়রা। সোমবার সকালে একটি নীলরঙের ট্রলি ব্যাগ নিয়ে দুজনকে ভাড়া বাড়িতে ঢুকতেও দেখেছিলেন কয়েকজন। বিকেলে মা আর মেয়ে বেরিয়ে যান।

মঙ্গলবার ভোরে ট্রলি হাতে ভাড়াবাড়ি দক্ষিণ বীরেশপল্লী থেকে ভ্যানে চেপে দোলতলার উদ্দেশ্যে যান অভিযুক্ত আরতি ও ফাল্গুনী। চালকের হাতে ১৩০ টাকা দেন বলে জানান ভ্যান চালক। যদিও তেমন কোন সন্দেহ হয়নি চালকের মনে। পরে ট্যাক্সি করে আহিরিটোলা গঙ্গার ঘাটে এসে উপস্থিত হন মা মেয়ে। ভারি ব্যাগ দেখে ট্যাক্সি চালক জানতে চাইলে কাঁসার বাসন আছে বলে জানান অভিযুক্ত এমনটাই দাবি চালকের।
লালবাজার সূত্রে খবর আগে ফাল্গুনী ঘোষের বাবা আহিরিটোলা এলাকায় থাকতেন। ফলে এলাকার পথঘাট বুঝতে খুব অসুবিধা হয়নি। সেই কারণেই হয়তো আহিরিটোলা ঘাটে এসে দেহাংশ লোপাটের চেষ্টা চালানো হয়। তবে সম্পত্তির লোভ নাকি খুনের পিছনে রয়েছে অন্য কোন কারণ,সেই রহস্য উদঘাটনে এখন মরিয়া পুলিশ প্রশাসন। ওই মৃতদেহের পায়ের একাংশ কাটা ছিল। জেলার মুখে মা ও মেয়ে স্বীকার করে টলি ব্যাগে ঢোকানোর জন্য মৃতদেহর পায়ের পাতা দুটো কেটে দিয়েছিল তারা।