সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব অনেকটা এগিয়েছেন। পিছু হটার প্রশ্নই আসে না বলে মনে করেন তার ঘনিষ্ঠ নেতারা। সমাজবাদী পার্টি এমন কিছু আসনে টিকিটও ঠিক করেছে যা কংগ্রেস দাবি করেছে। কংগ্রেস ইউপির সমস্ত বড় শহর থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মেজাজে ছিল। দাবি ছিল লখনউতেও।
National desk: মঙ্গলবার লোকসভা নির্বাচনের জন্য সমাজবাদী পার্টি তাদের ১৬ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। এই তালিকায় রয়েছেন অখিলেশ যাদবের স্ত্রী ডিম্পল যাদব এবং পরিবারের তিন সদস্য। ডিম্পল মইনপুরীর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ। তাকে আবার টিকিট দেওয়া হয়েছে। অখিলেশ যাদবের চাচাতো ভাই ধর্মেন্দ্র যাদব আবার বাদাউন থেকে নির্বাচনে লড়বেন। তিনি এর আগেও এখান থেকে এমপি হয়েছেন। অখিলেশের আরেক কাজিন অক্ষয় যাদব ফিরোজাবাদ থেকে নির্বাচনে লড়বেন।
তিনি সমাজবাদী পার্টির প্রধান সাধারণ সম্পাদক রাম গোপাল যাদবের ছেলে। অক্ষয় ইতিমধ্যেই ফিরোজাবাদ থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। কাকা শিবপাল যাদবের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কারণে গতবার হেরে গিয়েছিলেন অক্ষয়।
সমাজবাদী পার্টির ১৬ জন প্রার্থীর প্রথম তালিকায় প্রথম নাম শফিকুর রহমান বার্কের। তিনি সম্বলের সাংসদ। তার বয়স ৯৩ বছর। কিন্তু অখিলেশ যাদব আবার তাঁর প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছেন। লোকসভায় সমাজবাদী পার্টির ৩ জন সাংসদ রয়েছে। শফিকুর রহমান ও ডিম্পল যাদবকে টিকিট দিয়েছেন অখিলেশ যাদব। তবে তালিকায় নেই তৃতীয় এমপি ডাঃ এসটি হাসানের নাম। তিনি মোরাদাবাদের সাংসদ। এমতাবস্থায় তার টিকিট বাতিল হতে পারে কি না তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
কংগ্রেসকে ১১টি আসন ছাড়ছেন অখিলেশ
কংগ্রেসও নিজেদের জন্য এই আসন দাবি করছিল। এসটি হাসান তার বিতর্কিত বক্তব্যের জন্য সংবাদে থাকেন। শফিকুর রহমান বার্কও তার বক্তব্য নিয়ে বিতর্কে রয়েছেন। তবে টিকিটের তালিকায় তার নাম রয়েছে এক নম্বরে। অখিলেশ যাদব এখন ১৬ টি টিকিট চূড়ান্ত করে কংগ্রেসের কোর্টে বল রেখেছেন।এর আগে কংগ্রেসকে ১১টি আসন ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন অখিলেশ। সেদিন বিহারে নীতীশ কুমার ও বিজেপির মধ্যে জোট হয়েছিল। কংগ্রেসের নড়বড়ে মনোভাবে ক্ষুব্ধ হয়ে অখিলেশ আসন বণ্টন নিয়ে একতরফা সিদ্ধান্ত নেন। তিনি কংগ্রেসের জন্য মাত্র ১১ টি আসন ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন। মজার ব্যাপার হল সেই ১১টি আসন কোনটি তা কংগ্রেসও জানে না। দলের নেতারা একে অপরের কাছে এ প্রশ্নের জবাব চাইছেন। কিছু নেতা এমনকী এই ব্যাপারে নেতাদেরকে অখিলেশ যাদবের ঘনিষ্ঠ বলেছেন।
এসপি’র আসন ভাগাভাগির সূত্র প্রত্যাখ্যান করেছে কংগ্রেস
অখিলেশ যাদবের আসন ভাগাভাগির ফর্মুলা প্রত্যাখ্যান করেছে কংগ্রেস। এ বিষয়ে কোনো কথাই এড়িয়ে যাচ্ছেন দলের বড় কোনো নেতা। কিন্তু সবাই অবাক ও বিচলিত। দলের রাজ্য সভাপতি অজয় রাই নিরন্তর দাবি করছেন, এখনও আলোচনা চলছে। এমনকি তিনি বলেছিলেন যে এই সিদ্ধান্ত কংগ্রেসকেই নিতে হবে। মুকুল ওয়াসনিককে সূত্র ঘোষণা করতে হবে। কিন্তু যা হওয়ার ছিল তাই হয়েছে।সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব অনেকটাই এগিয়েছেন। পিছু হটার প্রশ্নই আসে না বলে মনে করেন তার ঘনিষ্ঠ নেতারা। সমাজবাদী পার্টি কিছু আসনে টিকিট ঠিক করেছে যা কংগ্রেস দাবি করেছে। কংগ্রেস দল ইউপির সমস্ত বড় শহর থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মেজাজে ছিল। লখনউতেও দলটির দাবি ছিল। কিন্তু সমাজবাদী পার্টি এখান থেকে তাদের বিধায়ক রবিদাস মেহরোত্রাকে প্রার্থী করেছে। কংগ্রেস দলও খেরি থেকে টিকিট দাবি করছিল।
অখিলেশের সিদ্ধান্তে ব্যাকফুটে কংগ্রেস
মাত্র দুই মাস আগে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন সমাজবাদী পার্টির সিনিয়র নেতা রবি ভার্মা। এর আগেও তিনি খেরী থেকে বহুবার এমপি হয়েছিলেন। সমাজবাদী পার্টি ছাড়ার পর তিনি অখিলেশ যাদবের বিরুদ্ধে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন। রবি ভার্মাকে মুলায়ম সিংয়ের ঘনিষ্ঠ মনে করা হতো। তিনি দল ছাড়ার পরে, অখিলেশ যাদব তার বিধায়ক উৎকর্ষ ভার্মাকে টিকিট দিয়েছিলেন। দুজনেই একই সম্প্রদায় থেকে এসেছেন।
অখিলেশ যাদবের আকস্মিক একতরফা সিদ্ধান্ত কংগ্রেসকে ব্যাকফুটে ফেলে দিয়েছে। আমরা এখন কি করব! এ প্রশ্নের উত্তর কারো কাছে নেই। প্রথমে মায়াবতীর কাছ থেকে লাল সংকেত আর এখন অখিলেশের থেকে ডবল ডোজ। কংগ্রেসের অবস্থা সামনে পাহাড় আর পিছনে অতল গহ্বরের মতো। কংগ্রেস একা লড়াই করার অবস্থায় নেই। সমাজবাদী পার্টি সমর্থন না করলে রায়বেরেলি আসনও আটকে যেতে পারে। এখান থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সোনিয়া গান্ধী।
অখিলেশ যাদব RLD-এর জন্য 7টি এবং কংগ্রেসের জন্য 11টি আসন ছেড়েছেন। কংগ্রেস আত্মবিশ্বাসী ছিল যে বিএসপির সাথে একটি সমঝোতা হতে পারে। কিন্তু মায়াবতী কোনো সেন্টিমেন্ট দেননি। এখন অখিলেশ যাদবও কংগ্রেসের দাম কমিয়েছেন। পেলাম না মায়া, রাম। এখন কংগ্রেস খুব কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি। যেখানে 23টি আসনের দাবি ছিল। কিন্তু এখন সম্মান বাঁচানোর লোক আছে। চ্যালেঞ্জ ভারতের জোটকে বাঁচানো। অখিলেশ যাদব যা বলেছেন তাই করছেন। তিনি বলেছিলেন, ইউপিতে এমপির প্রতিশোধ নেবেন।
Photo- ইউপিতে আসন নির্ধারণের আগেই অখিলেশ তার 16 জন প্রার্থী নির্ধারণ করেছিলেন।