খবরএইসময় ডেস্ক: বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ‘আনসারুল্লা বাংলা টিম’ (এবিটি)- এর সাথে জড়িত সন্দেহে ছয় সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করেছে ভারতের অসম রাজ্যের পুলিশ। অসমের বরপেটা জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। গ্রেফতারকৃত ছয়জনই ভারতীয় নাগরিক, শনিবার তাদের অসমের স্থানীয় আদালতে তোলা হলে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেয়া হয়।
এরা হল জাহিদুল ইসলাম (৩৯), মুফতি সুলেইমান আলি (৩৩), রশিদুল ইসলাম (২৮) এবং মোসারফ হোসেন (২৭), সাদ্দাম হুসেন (২৫) এবং মোকিবুল ইসলাম (২৪)। এর মধ্যে মোকিবুলের সাথে ভারতের কেরল ভিত্তিত কট্টরবাদী মুসলিম সংগঠন ‘পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া’ (পিএফআই)-এর সাথে যোগ আছে বলে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। এদের কাছ থেকে ১৫ টি মোবাইল ফোন, ২০ টি মোবাইল সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ১২০বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র), ১২১ (রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ), ১২১এ (রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র) সহ ইউপিএ আইনের অধীন ১৭,১৮,১৮বি (জঙ্গি কার্যকলাপের জন্য অর্থ সংগ্রহ, ষড়যন্ত্র, নিয়োগ দেওয়া) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বরপেটার পুলিশ সুপার অমিতাভ সিনহা জানান, ‘বিশেষ তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার বরপেটার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে এই ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার তাদের আদালতে তোলা হলে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেয় আদালত। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জঙ্গি কার্যকলাপ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করা হবে।’
সিনহা আরও জানায় ‘গ্রেপতারকৃত ৬জনই এবিটি’এর হয়ে জেলার একাধিক যুবককে জিহাদী ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ করার কাজে যুক্ত ছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। গত ৪ মার্চ বরপেটা থেকে সইফুল ইসলাম ওরফে মোহাম্মদ সুমন ওরফে হারুন রশিদ নামে সন্দেহভাজন এক বাংলাদেশি সহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে অসম পুলিশ। সইফুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই জানা যায় নারায়নগঞ্জের বাসিন্দা সইফুল অবৈধ ভাবে সীমান্ত পেরিয়ে সে অসমে প্রবেশ করে এবং বরপেটার ঢাকালিপারা মসজিদে আরবি ভাষার শিক্ষকের কাজ নেয়। আর শিক্ষকতার আড়ালে গোপনে অসম সহ উত্তরপূর্ব ভারতে জঙ্গি সংগঠন ‘আল কায়দা ইন ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট’ (একিউআইএস)’এর শাখা বিস্তারের কাজ শুরু সে।
গুরুত্ব বুঝে অসম পুলিশের হাত থেকে ওই মামলার দায়িত্বভার গ্রহণ করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। জানা যায় সইফুলই বাকী চারজন ভারতীয়কে উদ্বুদ্ধ করে জিহাদী কার্যকলাপের সাথে যুক্ত করে। এমনকি জেহাদী কার্যকলাপের জাল যে অনেক দূর ছড়িয়ে পড়ে সেকথাও জানতে পারে তদন্তকারী কর্মকর্তারা। আদালতের নির্দেশে তারা সকলেই গুয়াহাটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বিচারাধীন।
এরপর গত প্রায় একমাস ধরে রাজ্যটির বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হয়। অবশেষে এই ছয়জন ভারতীয়কে গ্রেফতার করা হয়।