বাংলাদেশে সহিংসতার (Bangladesh Crisis) পরিপ্রেক্ষিতে সেখানকার নাগরিকরা প্রতিনিয়ত ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। বৃহস্পতিবারও কিষাণগঞ্জ সংলগ্ন উত্তরবঙ্গের ইসলামপুর থানা এলাকা থেকে শত শত বাংলাদেশি নাগরিক বাংলাদেশ সীমান্তে জড়ো হয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করলেও বিএসএফ তাদের প্রবেশের চেষ্টা নস্যাৎ করে দেয়।
বাংলাদেশে চলমান সহিংসতার (Bangladesh Crisis) মধ্যে, বৃহস্পতিবার আবারও বাংলাদেশিদের ভারতে প্রবেশের চেষ্টা নস্যাৎ করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী। কিষাণগঞ্জ সংলগ্ন উত্তরবঙ্গের ইসলামপুর থানা এলাকা থেকে বাংলাদেশ সীমান্তে শত শত বাংলাদেশী নাগরিক জড়ো হয়ে ভারতে প্রবেশের অনুরোধ জানায়। বিএসএফ কমান্ড্যান্ট অজয় শুক্লা এবং ইসলামপুর থানার এসপি জেবি থমাস এই খবর পেয়ে পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সেখানে বাংলাদেশি নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের ফিরিয়ে দেন।
এদিকে সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নদীতে স্পিড বোট নামানো হয়েছে। রাতে সীমান্ত সড়কে নাইট ভিশন ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। ড্রোনের মাধ্যমেও সীমান্ত এলাকায় নজরদারি করা হচ্ছে। বিএসএফ অতিরিক্ত সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
বাসিন্দাদের সতর্ক করতে পুলিশ ও বিএসএফ যৌথভাবে গ্রামে গ্রামে মিটিং করছে। বৃহস্পতিবার কোচবিহারের বহু গ্রামে সভা অনুষ্ঠিত হয়। মেখলিগঞ্জের তিন বিঘা করিডোরেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতির কারণে সীমান্তে অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
সন্ত্রাসীরাও ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে
শুধু সাধারণ মানুষই নয়, সুযোগ পেলে জঙ্গি বা অপরাধীরাও সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টা করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। বিষয়টি মাথায় রেখে সীমান্তে কড়া নজরদারি রেখেছে বিএসএফ। পুলিশও নজর রাখছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানিয়েছেন যে সমস্ত পক্ষের উপর নজর রাখা হচ্ছে। বিএসএফের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বাংলাদেশে তোলপাড় শুরু হওয়ার পর থেকে সীমান্তে নজরদারি অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে গ্রামের বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের সীমান্তের একটি বড় অংশ অন্তর্ভুক্ত কোচবিহার জেলা। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে কোচবিহারের প্রায় ৫০৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এগুলোর একটা বড় অংশ এখনো কাঁটাতারে ঢাকা।
কর্মকর্তারা গ্রামের মানুষের সঙ্গে বৈঠক করছেন
এর অনেক অংশে নদী রয়েছে। তুফানগঞ্জের বালাভুট, দিনহাটার নাজিরহাট, গীতালদহ, সিতাইয়ের অনেক এলাকায় কাঁটাতার নেই। গীতালদহে ধরলা নদীর ওপারে জারিধরলা ও দারিব নামে দুটি গ্রাম রয়েছে। নদী দুটি গ্রামকে ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে পৃথক করেছে। কাঁটাতার নেই। নদীপথে বাংলাদেশে প্রবেশ করা সম্ভব, যেখানে বাংলাদেশের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে অবাধ চলাচলের অভাবের অভিযোগ করে আসছেন। সেখানেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
এদিন বিএসএফের ৯০তম ব্যাটালিয়ন দিনহাটার গীতদলদহর সীমান্ত সংলগ্ন দারিব ও জারিধরলা এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করে। বিএসএফ-এর ৯০তম ব্যাটালিয়নের কোম্পানি কমান্ড্যান্ট বি মীনা ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য আবুল কালাম আজাদ, দিনহাটা থানার গীতালদহ পুলিশ পোস্টের অফিসার ইনচার্জ এবং অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা।
ওই বৈঠকে বিএসএফ অফিসার বাংলাদেশের বিষয়টি তুলে ধরে গ্রামবাসীকে নানাভাবে সতর্ক করেন। তিনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে গ্রামবাসীদের জানান এবং সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। এছাড়াও সার্বক্ষণিক বিএসএফের সাথে যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কুর্শামারী ও হলদিবাড়ির ইমলি গ্রামে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বৈঠকও করেছে বিএসএফ।