Bengaluru Stampede: বেঙ্গালুরুতে RCB-র জয় উদযাপন অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত বহু, মৃত‍্যু সংখ্যা নিয়ে জল্পনা

বেঙ্গালুরু : আইপিএল ২০২৫-এর শিরোপা জয়ের পর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি)-র বিজয় উৎসব অনুষ্ঠানে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা ও পদপিষ্টের (Bengaluru Stampede) ঘটনায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় আরও অনেকে আহত হয়েছেন। বেঙ্গালুরুতে এম. চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।

আরসিবি তাদের প্রথম আইপিএল শিরোপা জেতার পর দলটিকে দেখতে হাজার হাজার ভক্ত চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে জড়ো হয়েছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, যখন স্টেডিয়ামের ভেতরে আরসিবি দলের সম্মাননা অনুষ্ঠান শুরু হতে যাচ্ছিল, তখন বিপুল সংখ্যক মানুষ একসঙ্গে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। এর ফলে ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

মৃত‍্যু ও আহতদের সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশা:

প্রাথমিকভাবে, এই ঘটনায় অন্তত চারজনের মৃত্যুর (সরকারি তথ্য অনুযায়ী) খবর পাওয়া গেছে। তবে, কর্ণাটক বিজেপির রাজ্য সভাপতি বিওয়াই বিজয়েন্দ্র দাবি করেছেন যে, ১১ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই সংখ্যার অসঙ্গতি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চাপানউতোর শুরু হয়েছে।

সরকারের প্রতিক্রিয়া:

কর্নাটকের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি.কে. শিবকুমার জানিয়েছেন যে, এই মুহূর্তে কোনো মৃত্যুর সরকারি তথ্য পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, “তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা তা প্রকাশ করব।” তিনি আরও বলেন, “এটি একটি তরুণ ও উৎসাহী জনতা ছিল, তাই লাঠিচার্জ করা যায়নি।” ডি.কে. শিবকুমার পুলিশ কমিশনার এবং সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং পরে হাসপাতালে যাবেন বলেও জানিয়েছেন। তিনি জনসাধারণের কাছে শান্ত থাকার আবেদন জানিয়েছেন এবং উল্লেখ করেছেন যে, অনুষ্ঠানটি সংক্ষিপ্ত করে ১০ মিনিটের মধ্যে শেষ করা হয়েছে।

বিজেপির অভিযোগ:

আরসিবি-র জয় উদযাপন অনুষ্ঠানে পদপিষ্টের ঘটনায় কর্ণাটক বিজেপির সভাপতি বিওয়াই বিজয়েন্দ্র রাজ্য সরকারকে সম্পূর্ণ দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকারকে এই ট্র্যাজেডির সম্পূর্ণ দায়ভার নিতে হবে। যখন পুরো দেশ এবং কর্ণাটক আরসিবি-র জয় উদযাপন করছিল, তখন রাজ্য সরকার কোনো পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই বিজয় র‍্যালি বের করার তাড়াহুড়ো করে, যার ফলে এই ট্র্যাজেডি ঘটে।” তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, ঘটনাস্থলে কোনো পুলিশ বা অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা ছিল না। বিজেপি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে “প্রচার”-এ বেশি আগ্রহী হওয়ার অভিযোগ এনেছে।

উপ-মুখ্যমন্ত্রীর জবাব:

বিজেপির অভিযোগের জবাবে ডিকে শিবকুমার বলেন, “তারা অভিযোগ করার জন্য আছে এবং আমরা সেখানে রক্ষা করার জন্য আছি… হ্যাঁ, আমি হাসপাতালে যাচ্ছি।”

প্রধানমন্ত্রীর শোক:

বেঙ্গালুরুতে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “বেঙ্গালুরুতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা সত্যিই হৃদয় বিদারক। এই দুঃখজনক মুহূর্তে আমার সমবেদনা সেই সকল মানুষের সাথে রয়েছে যারা তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন। আমি প্রার্থনা করি যে, যারা আহত হয়েছেন তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।”

ট্রাফিক অ্যাডভাইজরি এবং সুরক্ষাব্যবস্থা:

বেঙ্গালুরু পুলিশ আগে থেকেই একটি ট্রাফিক অ্যাডভাইজরি জারি করেছিল যেখানে বলা হয়েছিল যে, শুধুমাত্র বৈধ টিকিট বা পাসধারীরাই স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে পারবেন। এছাড়াও, ব্যক্তিগত যান ব্যবহার এড়িয়ে মেট্রো বা গণপরিবহন ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, কারণ পার্কিং সুবিধা সীমিত ছিল। কর্ণাটক রাজ্য ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (কেএসসিএ) দ্বারা আয়োজিত এই বিশেষ সম্মাননা অনুষ্ঠানে, প্রথমবার আইপিএল জেতার পর আরসিবি দলের খেলোয়াড়রা তাদের ভক্তদের সাথে দেখা করতে স্টেডিয়ামে পৌঁছেছিলেন।

এই ঘটনা আবারও বড় জনসমাগমের ক্ষেত্রে সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণের গুরুত্বের উপর আলোকপাত করেছে। ঘটনাটি নিয়ে তদন্তের দাবি উঠেছে এবং প্রকৃত মৃত‍্যু সংখ্যা ও আহতদের সঠিক তথ্য জানার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।