বীরভূম: বীরভূমের দুবরাজপুরের কাঁকরতলা থানার জামালপুর গ্রামে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজি (Birbhum Massive Shelling)। মুড়িমুড়কি মত বোমা পড়ে গোটা গ্রামজুড়ে। বোমার আঘাতে এক তৃণমূল কর্মীর পা উড়ে গেছে এবং আরও একজন আহত হয়েছেন। ঘটনার পর ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বালির ঘাটের দখলদারি এবং টাকার ভাগাভাগি নিয়ে তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ইতিমধ্যেই ৬ জনকে আটক করেছে, তাদের মধ্যে ২ জন বর্তমানে চিকিৎসাধীন।
জানা গিয়েছে, অজয় নদের বালির ঘাট ও বালির টাকার ভাগ নিয়ে এই এলাকায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল দীর্ঘদিন ধরে৷ সেই থেকেই এদিন গ্রামের মাঠে দুই দলের আশ্রিত দুষ্কৃতিরা বোমাবাজি করে৷ ঘটনায় ব্যপক উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে কাঁকরতলা থানা ছাড়াও সিউড়ি পুলিশ লাইন থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী গ্রামে পৌঁছোয়৷ তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা ৷ বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ সিং জানান, এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তার মধ্যে ২ জন চিকিৎসাধীন।এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
বিজেপির অভিযোগ অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখ গোষ্ঠীর লোকজন বালির টাকা ভাগ নিয়ে বোমাবাজি করেছে৷ বিজেপির দুবরাজপুরের বিধায়ক অনুপ সাহা বলেন, “অনুব্রত ও কাজলের লোকেরা বালির কাটমানি, তোলার টাকা নিয়ে বোমাবাজি (Birbhum Massive Shelling) করেছে৷ ধিক্কার জানাই৷ কোথা থেকে এল এই বোমা। মুখ্যমন্ত্রী যখন বেআইনি বালি নিয়ে কথা বলছেন, তখন তার দলের লোকজন গ্রামে বোমাবাজি করছে।”
উল্লেখ্য, অনুব্রত মণ্ডল সম্প্রতি গোরু পাচার এবং আর্থিক তছরুপের মামলায় জামিন পেয়ে বীরভূমে ফিরেছেন। তার অনুপস্থিতিতে কাজল শেখ পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি হন। এই দুই নেতার মধ্যে তিক্ত সম্পর্ক এবং ঠাণ্ডা লড়াই বীরভূমের রাজনীতিতে উত্তেজনা তৈরি করেছে।
কাঁকরতলা থানার জামালপুর গ্রামে এদিন ঘটে যাওয়া বোমাবাজির (Birbhum Massive Shelling)ঘটনা তৃণমূলের স্থানীয় নেতা স্বপন সেন ও উজ্জ্বল হক গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ফলস্বরূপ বলে জানা গিয়েছে। দুই গোষ্ঠীর দুষ্কৃতিরা মাঠে একাধিক বোমা নিক্ষেপ করে, যার ফলে সাত্তার আলি নামে এক কর্মীর পা উড়ে যায়। আহতদের দ্রুত দুর্গাপুরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, সদ্য নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূমে বেআইনি বালি উত্তোলন এবং রাজস্বের অভাব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী বীরভূম জেলা শাসককে দ্রুত পরিস্থিতি দেখতে নির্দেশ দিয়েছিলেন, এবং এরপরেই দেখা গেল কেষ্ট-কাজলের বীরভূমে বালির টাকার ভাগ নিয়ে দলেরই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মুড়িমুড়কির মত বোমাবাজি
তৃণমূলের বীরভূম জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় জানান, “এটি তৃণমূলের কোনো বিষয় নয়। প্রশাসন বিষয়টি দেখছে এবং এটা সম্ভবত গ্রামের কোনো ব্যক্তিগত বা ক্লাবের সমস্যা হতে পারে।”