আরজি কর কাণ্ডের জেরে রাজ্যসভা সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন জহর সরকার (Jahar Sarkar) । পাশাপাশি তিনি রাজনীতি থেকে নিজেকে মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জহর সরকার তৃণমূলের সাংসদ ছিলেন। কিন্তু তাঁর ইস্তফায় আক্ষেপের সুর শোনা গেল বিরোধীদের গলায়। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “ভারতীয় রাজনীতির বড় ক্ষতি।”
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে বলেন, “জহর সরকার একজন মোদী বিরোধী মানুষ হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত। কিন্তু তাঁর কর্মদক্ষতা নিয়ে কেউ কোনওদিন প্রশ্ন তোলেনি। সম্পূর্ণ বিরোধী রাজনৈতিক অবস্থানে থেকেও বলতে পারি, রাজ্যসভা থেকে জহর সরকারের ইস্তফা, ভারতীয় রাজনীতির বড় ক্ষতি।”
অন্যদিকে কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, “জহর সরকারের প্রশংসা প্রাপ্য। একটা পার্টিতে থেকে সেই পার্টির বিরোধিতা করে তিনি মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি বাংলার মা-বোনদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন। বাংলায় যারা ক্ষমতার আগ্রাসনের বাইরে কিছু বোঝেন না, তাঁদের কাছে এই ধরনের প্রতিবাদের কোনও প্রতিফলন দেখা যাবে না বলে আমার মনে হয়।”
প্রসঙ্গত, রবিবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে জহর সরকার রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানান। পাশাপাশি তিনি জানান, রাজনীতি থেকে তিনি মুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি চিঠিতে লেখেন, “মাননীয়া মহোদয়া, বিশ্বাস করুন এই মুহূর্তে রাজ্যের সাধারণ মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন ও রাগের বহিঃপ্রকাশ আমরা দেখছি, এর মূল কারণ কতিপয় পছন্দের আমলা, দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পেশীশক্তির আস্ফালন।” তিনি আরও লিখেছেন, “সরকারের কোনও বক্তব্যকেই মানুষ বিশ্বাস করছে না। পুরনো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো কেন ঝাঁপিয়ে পড়ে কথা বলছেন না।”
আরজি কর ইস্যুতে আগে সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় মন্তব্য করেছিলেন। তিনি নারী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তিনি সরাসরি অভিযোগ করেছিলেন, পুলিশ প্রমাণ লোপাট করে দিয়েছে। সেই কারণে সিবিআইয়ের তদন্ত করতে অসুবিধা হচ্ছে। সাংসদ শান্তনু সেনও আরজি কর ইস্যুতে একাধিক প্রশ্ন তুলেছিলেন। যার জেরে তাঁকে দলের কোপের মুখে পড়তে হয়েছে। এবার আরজি কর ইস্যুতে রাজ্যসভার সাংসদ ইস্তফা দিলেন জহর সরকার।