নিজস্ব প্রতিনিধি,রায়গঞ্জ: হাত বাঁধা অথচ গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছে দেহটা। না, কোনও ঘরের মধ্যে নয়, মৃত ব্যক্তির বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে রাস্তার পাশে থাকা একটি বন্ধ চায়ের দোকানের সামনে। যার দেহ নিয়ে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে গোটা উত্তর দিনাজপুর জেলায় তিনি হেমতাবাদ বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায় (৫৯)।
আজ ভোরের আলো ফুটতেই হেমতাবাদ থানার বালিয়ামোড় এলাকায় স্থানীয় বিধায়কের ঝুলন্ত মৃতদেহটি দেখতে পেয়ে হতবাক হয়ে যায় স্থানীয়রা।মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে বিধায়কের মৃত্যুর খবর। স্থানীয়রাই খবর দেন থানায়। খবর পেয়ে ছুটে আসে হেমতাবাদ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। দেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে হেমতাবাদ থানার পুলিশ ।
বিধায়কের পরিবার সুত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় বালিয়ামোড় এলাকার এক চায়ের দোকানে বসে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে গল্পগুজব করে রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ বাড়ি ফিরেছিলেন দেবেন্দ্রনাথ বাবু। কিন্তু বিধায়কের ভাইঝি অভিযোগ করেছেন, রাত ১ টা নাগাদ কেউ বা কারা বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল তাঁর কাকা বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ বাবুকে। তারপর রাতে আর বাড়ি ফেরেননি তিনি।
দেবেন্দ্রনাথবাবুর স্ত্রী চন্দ্রিমা রায়ের দাবী, প্রথমে তাঁকে সুপরিকল্পিতভাবে খুন করেছে তারপর তাঁর দেহ ওইভাবে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। দোষীদের গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন মৃতের পরিবার। বিধায়কের মৃত্যুর বিষয়ে একই সুর শোনা গিয়েছে বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর মুখে । তিনি বলেছেন, “অত্যন্ত দুঃখজনক এবং সন্দেহজনক ঘটনা। হাত বাধা অবস্থায় কোনও মানুষ কখনই আত্মহত্যা করতে পারে না।” যদিও এই বিষয়ে নিশ্চিত করে এখনই কিছুই বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে হেমতাবাদ কেন্দ্র থেকে সিপিএম-র টিকিটে জিতেছিলেন দেবেন্দ্রনাথ রায়। তৃণমূলের ভরা বাজারেও বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হিসেবে হেমতাবাদের মাটিতে ফুটতে দেননি ঘাস ফুল। এরপরে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরেই দিল্লিতে গিয়ে যোগ দেন বিজেপি শিবিরে।