বনেদি বাড়ির (Bonedi barir Durga puja) পুজো মানে সাবেকিয়ানা ও রাজকীয়তার অদ্ভুত মিশেল। তাই বড় বড় মণ্ডপে যতই দর্শনার্থীদের (Bonedi barir Durga puja) ভিড় থাকে, সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশ সাবেকি (Bonedi barir Durga puja) পুজোর ওপর জোর দেন। আর বনেদি বাড়ির পুজো (Bonedi barir Durga puja) মানে নস্টালজিয়া আর ইতিহাসের যেন এক মিলক্ষেত্র। সেই রকম একটি বনেদি বাড়ির পুজো (Bonedi barir Durga puja) হল সাহা বাড়ির দুর্গা পুজো।
উত্তর কলকাতার বনেদি বাড়িগুলোর মধ্যে সাহাবাড়ির দুর্গা পুজো বেশ নামকরা। জানা যায় ১৭০ বছরের পুরনো এই পুজো। বউবাজারের ঠাকুরদাস পালিত লেনের পূর্ণচন্দ্র সাহার বাড়ি শ্রী শ্রী দুর্গা ভবন নামে পরিচিত। প্রতিটি বনেদি বাড়ির পুজোতে নিজস্ব কিছু রীতি থাকে। এই পুজোতেও নিজস্ব কিছু রীতি, বাড়ির নিজস্ব কিছু নিয়ম রয়েছে। রয়েছে পুজোর কিছু বিশেষত্ব। মা দুর্গাকে এখানে ডাকের সাজে দেখা যায়। উত্তর কলকাতার বনেদি বাড়ির পুজোতে মা দুর্গাকে সাধারণত ডাকের সাজেই দেখা যায়। এই বাড়ির প্রতিমাকে সাজিয়ে তোলেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পী আদিত্য মালাকারের পুত্র প্রবীর মালাকার। এই বাড়ির মূর্তি তৈরি করে আসছেন শিল্পী কানাইচন্দ্র লালের বংশধররা। যবে থেকে এই বাড়ির পুজো শুরু হয়েছে, কানাইচন্দ্র লালের বংশধররাই মূর্তি তৈরি করে আসছেন।
তবে এই বাড়ির পুজো হয় গুপ্ত পঞ্জিকা মতে। দেবীর বোধনের জন্য এই বাড়িতে আলাদা একটা ঘর রয়েছে। ষষ্ঠীর দিন মা দুর্গার বোধন সেখানেই হয়। অষ্টমীতে এখানে এখনও কুমারী পুজোর চল রয়েছে। সেই সময় ১০৮টা প্রদীপ জ্বালানো হয় বলে জানা গিয়েছে। এই বাড়ির দেবী দুর্গার আরাধোনার একটা নিজস্ব নীতি রয়েছে। এই বাড়ির মহিলারা ধুনো পুড়িয়ে রক্ত দিয়ে দেবীর আরাধোনা করেন। আগে দশমীর দিন ৪০ জন বাহকের কাঁধে প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য নিয়ে যাওয়া হতো। তবে বর্তমানে প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য লরি ব্যবহার করা হয়। সাহা বাড়ির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, নবপত্রিকা সহ লক্ষী, সরস্বতী ও মা দুর্গার নিরজ্ঞনের সময় সোনার নথ পরানো থাকে।