নাট্যকার ও শিল্পীদের পুরস্কার ফেরানো নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করলেন ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। তিনি বলেন, “নাটকের যিনি পদত্যাগ করেছেন, তিনি বামফ্রন্টের প্রার্থী ছিলেন।” তিনি বলেন, সব জানার পরেও নাট্য অ্যাকাডেমি তাঁকে পুরস্কৃত করেছেন। পাশাপাশি তীব্র আক্রমণ করে ব্রাত্য় বসু বলেন, “কেন্দ্রীয় স্তরে এমন ঘটনা ঘটতো, সেক্ষেত্রে কেন্দ্রের কোনও পুরস্কার থাকলে তাহলে তিনি ফেরত দিতেন তো!”
ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) মন্তব্যে শিল্পী মহল থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়নি। প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডের আন্দোলন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন উত্তরপাড়ার বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক। তিনি বলেন, “সরকারি যেসব কর্মীরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা সরকারের বেতন নেবেন না তো! বোনাস নেবেন না তো! যেসব শিল্পী পথে নামছেন তাঁরা সরকারি পুরস্কার ফেরত দিতে পারবেন তো! আমরা পুরস্কার নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।” কাঞ্চন মল্লিকের কথা শিল্পী মহলে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়। একের পর এক শিল্পী আপমানিত হয়ে পুরস্কার ফেরাতে থাকেন। তার মধ্যে রয়েছে, নাট্য অ্যাকাডেমি থেকে সেরা সহ অভনেত্রীর পুরস্কার পাওয়া সঞ্চিতা মুখোপাধ্যায়। তিনি তাঁর পুরস্কার ফেরত দেওয়ার প্রসঙ্গে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে বলেন, নিজের মেয়ের জন্য কিছু রেখে যেতে চান। সেই কারণে এই পুরস্কারটা তাঁকে ফেরত দিতেই হতো। অন্যদিকে, সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কাঞ্চন মল্লিক কদর্যভাবে কথাগুলো বলেছেন। তিনি নীচে নামতে পারেননি। তিনি মেরুদণ্ড সোজা রেখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। সেই কারণে তিনি পুরস্কার ফেরত দিতে পারছেন। অন্যদিকে, কাঞ্চন মল্লিকের কথায় অপমানিত হয়ে বিশিষ্ট নাট্যকার চন্দন সেন ও বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায় পুরস্কার ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অন্যদিকে রাজ্য চারুকলা পর্ষদের সদস্যপদ ছাড়লেন বিশিষ্ট শিল্পী সনাতন দিন্দা। তিনি ফেসবুক প্রোফাইলে নিজের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, এমনিতেই তিনি দীর্ঘদিন ধরে পর্ষদে অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁর সেভাবে কোনও সক্রিয় ভূমিকা ছিল না। এবার তিনি সদস্যপদ থেকে নিজেকে মুক্ত করলেন।
আরজি কর কাণ্ড সাধারণ মানুষের মনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। রাজ্যের সমস্ত স্তরের মানুষ বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ করছেন। ১৪ আগস্টের পর ৪ সেপ্টেম্বর রাত দখলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেই রাত দখল সফল হয়েছিল। পাশাপাশি রাতে ৯টার পর এক ঘণ্টা সকলকে ঘরের আলো বন্ধ করে মোমবাতি জ্বালিয়ে বাইরে আসার আহ্বান করেছিলেন আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসকরা। রাজ্যের মানুষ সেই ডাকে সারা দিয়েছিলেন। তারমধ্যেই সরকারি পুরস্কার পদত্যাগ করতে শুরু করেছেন একের পর এক নাট্য বক্তিত্ব, অভিনেতা, অভিনেত্রীরা।