কলকাতা আরজি কর কাণ্ডে মহিলা চিকিৎসককে নৃশংস নির্যাতন করে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে এক সিভিক ভলেন্টিয়ারকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷ সেই আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে চলা বিক্ষোভ কর্মসূচিতেই মত্ত অবস্থায় বাইক নিয়ে ঢুকে পড়ার অভিযোগ উঠল আর এক সিভিক ভলেন্টিয়ারের বিরুদ্ধেই৷ শুক্রবার রাত থেকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে হয়ে ওঠে বি টি রোডের(BT road blockade) উপরে সিঁথির মোড় এলাকা৷
পুলিশ অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ারকে পালাতে সাহায্য করেছে, এই অভিযোগে এ দিন ভোর থেকে সিঁথির মোড়ে অবরোধ করেন বিক্ষোভকারী রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা৷ যে পুলিশ আধিকারিক অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ারকে বের করে নিয়ে যান বলে অভিযোগ, তাঁকে ঘেরাও করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা৷ শেষ পর্যন্ত পুলিশ এফআইআর দায়ের করে অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ারকে হেফাজতে নেওয়ার পর অবরোধ ওঠে৷
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার রাত তিনটে নাগাদ৷ বিক্ষোভকারীদের দাবি, পুলিশের অনুমতি নিয়েই রাস্তার একটি অংশ জুড়ে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে বিটি রোডের উপরে গ্রাফিটি আঁকা, পথ নাটিকার আয়োজন করেন তাঁরা৷ মূলত রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের উদ্যোগেই রাত জাগো কর্মসূচির আয়োজন করা হয়৷ ব্যারিকেড করে রাস্তার ওই অংশে গাড়ি চলাচল বন্ধ রেখেছিল পুলিশই৷ রাত ১২ থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত এই কর্মসূচির অনুমতি ছিল৷ অভিযোগ, রাত তিনটে নাগাদ আচমকাই রাস্তা ঘিরে রাখা ব্যারিকেড সরিয়ে সেখান দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেন এক যুবক৷ ওই মোটরসাইকেলের সামনে পুলিশ লেখা ছিল৷ সঙ্গে সঙ্গে ওই যুবককে আটকান বিক্ষোভকারীরা৷ কেন ব্যারিকেড ভেঙে ওই যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে ঢুকে পড়লেন, সেই প্রশ্ন করেন বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা৷ অভিযোগ, বাইক আরোহী ওই যুবক মত্ত অবস্থায় ছিলেন৷ পরে জানা যায়, তিনি নিজে একজন সিভিক ভলেন্টিয়ার৷
গন্ডগোল থামাতে সেখানে হাজির হন কর্তব্যরত এক ট্রাফিক সার্জেন্ট৷ বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ওই অফিসারই অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ারকে সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করেন৷ এর পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিক্ষোভকারীরা৷ কেন ওই সিভিক ভলেন্টিয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে পুলিশ ছেড়ে দিল, সেই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা৷ এর পর এ দিন ভোর চারটের পর থেকে ঘটনার প্রতিবাদে সিঁথির মোড়ে অবরোধ শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা৷ পুলিশের ওই অফিসারকেও ঘেরাও করে রাখেন তাঁরা৷ শেষ পর্যন্ত সকালে পুলিশ কাশীপুর থানায় অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পাশাপাশি তাকে গ্রেফতার করে৷ ওই সিভিক ভলেন্টিয়ারকে সাহায্য করা সার্জেন্টের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের আশ্বাসও দেওয়া হয় বিক্ষোভকারীদের৷ এফআইআর-এর কপি হাতে পাওয়ার পর পথ অবরোধ তুলে নেওয়া হয়৷