খবর এইসময় ডেস্ক: গেমিং অ্যাপ খুলে প্রতারণার কাণ্ডে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করেছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা। গার্ডেনরিচের ব্যবসায়ী নিসার আহমেদ খানের ছেলে আমির খানের (Amir Khan) বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, আমির খান ‘ ই-নাগেটস’ নামে একটি মোবাইল গেমিং অ্যাপ্লিকেশন শুরু করেছিলেন। সেই গেমিং অ্যাপ ব্যবহার করে চলত প্রতারণা। ওই অ্যাপ্লিকেশনের আসল উদ্দেশ্য ছিল জালিয়াতি অর্থাৎ মানুষের টাকা হাতিয়ে নেওয়া। শুরুতে ইউজারদের রিওয়ার্ড পয়েন্ট হিসাবে কমিশন দেওয়া হত। বলা হত ওই রিওয়ার্ড ওয়ালেটে জমা হচ্ছে। তার পর ওয়ালেট থেকে তা তোলা যাবে। এভাবেই মানুষের বিশ্বাস অর্জন করেন আমির খান। এরপর অনেকেই আরও বড় কমিশনের লোভে আরও বেশি টাকার কেনাকাটা করেন।
এভাবে প্রচুর লোকের থেকে টাকা আদায়ের পর হঠাৎ ওই গেমিং অ্যাপ বন্ধ করে দেয় আমির। তখন বলা হয় যে সিস্টেম আপগ্রেড করা হচ্ছে। কিন্তু সেই অছিলা দেখিয়ে সার্ভার থেকে সব ডেটা মুছে দেওয়া হয়। শনিবার তল্লাশির সময়ে দেখা গিয়েছে প্রচুর ডামি অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করত আমিররা। দুপুরে ইডি জানিয়ে দেয়, আমিরের দোতলার বাড়ি থেকে ৭ কোটিরও বেশি টাকা পাওয়া গিয়েছে। দোতলার একটি ঘরের খাটের তলায় অসংখ্য প্লাস্টিকের থলিতে ভরা ছিল নোটের বান্ডিল। তাতে ৫০০ এবং ২০০০ টাকা নোট রাখা ছিল। ওই টাকা গুনতে ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের ডেকে পাঠানো হয়। নিয়ে আসা হয় টাকা গোনার মেশিন। এখনও পর্যন্ত ৭ কোটি টাকা গোনা হয়েছে। কিন্তু সেটাই শেষ নয়। বাকি টাকা গোনা চলছে। চূড়ান্ত হিসাব সন্ধে নাগাদ পাওয়া যাবে।
কিন্তু বিষয়টি হচ্ছে, তাহলে অনলাইনে অপরাধ আটকানোর জন্য এত যে সাইবার ক্রাইম সেল, সাইবার ক্রাইম থানা তৈরি করা হচ্ছে, তাতে শেষ পর্যন্ত কতটা উপকৃত হচ্ছেন আমজনতা? শেষ পর্যন্ত তো সেই প্রতারণার শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ নাগরিকদের। ‘ই-নাগেট’ নামে পুলিশের কাছে কি কোনও খবরই ছিল না এই বিষয়ে?
যদিও ইডির তরফে এদিন জানানো হয়েছে, এই নিয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পার্ক স্ট্রিট থানায় আমির খান এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও এতদিনে এই বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত ইডির অভিযানে উদ্ধার হল কোটি কোটি টাকা। তাহলে দেড় বছর আগেই অভিযোগ পাওয়ার পরও কেন এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারল না পুলিশ? তাহলে কি পুলিশের কাছে কোনও খবর ছিল না? কলকাতা পুলিশ কি আইপি অ্যাড্রেস ট্র্যাক করে এই মোবাইল অ্যাপটি কোথা থেকে চলছে তা বের করার চেষ্টা করেছিল? এমন বেশ কিছু প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে ওয়াকিবহাল মহলে।