নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রামঃ খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে দামালের তাণ্ডবে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। বাড়ি ভেঙে ভিতরে মজুত চাল খেয়ে ছড়িয়ে তছনছ করে দিয়েছে৷ কোনোরকমে নাবালক দুই শিশুকে নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে প্রাণে বাঁচল এক দম্পতি৷ চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বনদফতরের গোয়ালতোড় রেঞ্জের শাঁখাভাঙ্গাতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শাঁখাভাঙ্গা গ্রামের হতদরিদ্র চাষি শীতল মুর্মু ও তার স্ত্রী বেলমনি মুর্মু তাদের দুই নাবালক শিশুকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন বাড়ির মধ্যেই। নিম্নচাপের জেরে সারা রাত ধরেই বৃষ্টি হওয়ার দরুন প্রতিবেশীরাও তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে৷ সেই সুযোগে জঙ্গল থেকে খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে একটি হাতি লোকালয়ে চলে আসে।
রাস্তার ধারেই শীতলের নতুন কাঁচা বাড়িতে হামলা চালায়। মাটির দেওয়াল ভেঙে বাড়িতে মজুত প্রায় ৫০ কেজি চাল খেয়ে ছড়িয়ে তছনছ করে। সেই সময় শীতল আর তার স্ত্রী বেলমনি নাবালক দুই শিশুকে নিয়ে বাড়ির মধ্যেই ঘুমচ্ছিলেন। দেওয়াল ভাঙার আওয়াজে সকলের ঘুম ভেঙে যায়। নাবালক দুই শিশু ভয় পেয়ে চিৎকার করতে থাকে। তখন তারা বাড়ি থেকে কোনও রকমে বেরিয়ে পালিয়ে যায়। পরে গ্রামবাসীদের জানালে গ্রামবাসীরা হাতিটিকে তাড়িয়ে জঙ্গলে ফেরত পাঠায়৷
শীতলের স্ত্রী বেলমনি মুর্মু জানান, জনমজুরী করে কোনো রকমে সংসার চালায়৷ লকডাউনের মাঝেই কোনো রকমে এই মাটির বাড়িটি তৈরি করে এসবেস্টের ছাউনি দিয়েছিলাম। আর হাতি এসে বাড়ি ভেঙ্গে চাল খেয়ে চলে যায়৷ এখন এই লকডাউনের মধ্যে আমরা কি খাবো আর কোথায় থাকবো সেটাই বড়ো চিন্তার বিষয়।
এদিকে গোয়ালতোড় রেঞ্জের রেঞ্জার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে এসে সরেজমিনে দেখে যান। তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্তকে আবেদন করতে বলেছি৷ আবেদনের ভিত্তিতে সরকারি নিয়মানুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। গোয়ালতোড়ের ধরমপুরের জঙ্গলে একটি হাতি বেশ কিছুদিন হল আস্তানা গেড়েছে। সেই হাতিটিই খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে লোকালয়ে গিয়ে উপদ্রব করছে৷
লবনদফতর হাতিটিকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু হাতিটি অন্যত্র সরে পড়লেও ফের এই জঙ্গলেই চলে আসছে আর তাতেই এই বিপত্তি ঘটছে। এলাকাবাসীর কাছে আবেদন রাতে একা কেউ ঘোরাঘুরি করবেন না, প্রয়োজনে একত্রিত হয়ে হুলা পটকা সহযোগে হাতিটি গ্রামে এলে জঙ্গলের দিকে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন৷ হাতি তাড়ানোর প্রয়োজনীয় সামগ্রী বনদফতরের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে৷