কলকাতার শিয়ালদহ আদালত ১৬২ দিন পর চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় (RG Kar) শাস্তি ঘোষণা করল। সঞ্জয় ঘোষ, কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার, দোষী (RG Kar) সাব্যস্ত হয়েছেন। তবে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি, আদালত তাঁকে (RG Kar) যাবজ্জীবন (আমৃত্য) কারাদণ্ডের শাস্তি দিয়েছে। এই সঙ্গে এক লক্ষ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও পাঁচ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। অপরাধের শিকার ১৭ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে রাজ্য সরকার, তবে মৃতার বাবা জানিয়েছেন যে তাঁরা এই ক্ষতিপূরণের অর্থ চান না।
এই ঘটনা গত ৮ আগস্ট রাতে ঘটেছিল, যখন সঞ্জয় ঘোষ ডিউটিতে ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা সঞ্জয় ঘোষ চিকিৎসক-পড়ুয়ার ওপর ধর্ষণ এবং হত্যার মতো নৃশংস অপরাধ করেছেন। সিবিআই-এর পক্ষ থেকে আদালতে বলা হয়, ‘‘এ ধরনের অপরাধ শুধুমাত্র এক পরিবারকে নয়, পুরো সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’’ সিবিআই এই ঘটনায় দোষীর জন্য মৃত্যুদণ্ডের দাবি করেছিল এবং জানায় যে, সমাজে বার্তা দেওয়ার জন্য অপরাধীকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন।
তবে সঞ্জয়ের আইনজীবীরা সিবিআইয়ের মৃত্যুদণ্ডের দাবি খণ্ডন করেন। তাঁদের মতে, এ ঘটনা ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ নয় এবং এখনও তদন্ত চলছে। তাঁরা প্রথমে সংশোধনের সুযোগ দেওয়ার পক্ষে ছিলেন এবং আদালতে আরও প্রমাণ উপস্থাপনের জন্য সিবিআইকে অনুরোধ করেন। এদিকে, শাস্তির ঘোষণার পরও নিহতের পরিবার ও সমাজের বেশিরভাগ অংশ এই শাস্তিকে সন্তোষজনক মনে করেনি। তাঁদের প্রত্যাশা ছিল, সঞ্জয় ঘোষকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে, কিন্তু আদালত সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে।
একদিকে সঞ্জয়ের তরফে হাইকোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, তারা সঞ্জয়ের ফাঁসি চায়। সেই ফাঁসির আবেদন নিয়ে তারা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবে। এদিন শিয়ালদহ আদালতে বিচারক অনির্বান দাস বলেন, , ‘‘আপনার বিরুদ্ধে যা তথ্যপ্রমাণ এবং সাক্ষীর উপর বিশ্বাস করে আমি বিচার করতে বসেছি। ৩ ঘণ্টা জেরার পর যা সাক্ষ্য মিলেছে তা আপনার বিরুদ্ধে চার্জের জন্য যথোপযুক্ত বলে মনে হয়েছে। তাই আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। আপনি নির্দোষ আগেও বলেছেন। আপনার কথা আগেও বলেছেন। আপনার শাস্তির বিষয়ে কিছু বলার থাকলে বলুন। আর আপনার বাড়িতে কে কে আছেন?’’