নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে গোলশূন্য ছিল পর্তুগাল ও স্লোভেনিয়া। টাইব্রেকারে স্লোভেনিয়া প্রথম তিনটি শটেই লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি। অতিরিক্ত সময়ে পেনাল্টি মিস করে কান্নায় ভেঙে পড়েন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো (Cristiano Ronaldo)। ম্যাচের ভাগ্য শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত হয় টাইব্রেকারে। পর্তুগিজ গোলরক্ষক দিয়াগো কস্তা তার হাতের জাদুতে স্লোভানিয়ার খেলোয়াড়দের রুখে দেন। ট্রাইবেকারে জয় পেয়ে স্লোভেনিয়াকে হারিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের শেষ আট নিশ্চিত করে রোনাল্ডোরা।
অতিরিক্ত সময়ে পেনাল্টি মিস করে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন রোনাল্ডো। ম্যাচের বয়স তখন ছিল ১০৫ মিনিট। ওই সময় পর্তুগালের হয়ে রোনাল্ডোর শট থামিয়ে স্লোভেনিয়ার নায়ক হয়ে ওঠেন গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক। সুযোগ হাতছাড়া করা রোনাল্ডো তখন শিশুর মতো কাঁদছিলেন। মনে হচ্ছিল এই ম্যাচেই হয়ত শেষ হতে চলেছে রোনাল্ডোর ইউরো অভিযান। কিন্তু নাহ, সতীর্থ ডিয়াগো কস্তা সেটা হতে দেননি। টাইব্রেকারে তিনি তার হাতের জাদু দেখান। স্লোভেনিয়ার একটি শটও তিনি যেতে দেননি নিজের জালে।
অতিরিক্ত সময়ের খেলায় বিরতি, মাঠের এক পাশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়ে পর্তুগালের খেলোয়াড়েরা। সেখানে শিশুর মতো কাঁদছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো । অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে খেলার শেষ মিনিটে (১০৫) পেনাল্টি পেয়েছিল পর্তুগাল। ইতিহাসের প্রথম খেলোয়ার হিসেবে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলে পেনাল্টিতে দেড়’শ গোলের মাইলফলক ছোঁয়া, সর্বশেষ ১৩ পেনাল্টিতেই গোল করা রোনাল্ডো সেই পেনাল্টি থেকে গোল করতে পারেননি। স্লোভেনিয়া গোলকিপার ইয়ান ওবলাক বাজপাখির মতো ছোঁ মেরে বলটা ঠেকিয়ে দিলেন!
অতিরিক্ত সময়ের তখন ১১৫ মিনিট। পর্তুগালের রক্ষণে বিরাট ভুল করে বসলেন পেপে। ইউরোয় সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড়ের রেকর্ড গড়া ৪১ বছর বয়সী পেপে পাস ধরে পায়ে রাখতে পারেননি। পেয়ে যান স্লোভেনিয়া ফরোয়ার্ড বেঞ্জামিন সেসকো। বল নিয়ে টান দিতেই সামনে পর্তুগাল গোলকিপার ডিওগো কস্তা।
বাঁ পা-টা বাড়িয়ে সেসকোর শট রুখে কস্তা সে যাত্রায় পর্তুগালের বিদায়ও ঠেকালেন। ইউরোয় দ্বিতীয়বার এসেই শেষ ষোলোয় ওঠা স্লোভেনিয়া এই সুযোগটা নষ্ট করে পরে কপাল চাপড়েছে। কারণ সেই কস্তাই টাইব্রেকারে টানা তিনটি শট ঠেকিয়েছেন।
টাইব্রেকারে স্লোভেনিয়ার জোসিপ ইলিচিচ, জুরে বালকোভেচ ও বেঞ্জামিন ভারবিচের শট ঠেকান কস্তা। শেষ শটটি ঠেকানোর পর মাঝমাঠে সতীর্থদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা রোনাল্ডোর মুখে তখন হাসি ফুটেছে। নির্ধারিত সময়ের দুই অর্ধ মিলিয়ে তিনটি ফ্রি কিক নিয়েও গোল পাননি। বল একবার পোস্টের ওপর দিয়ে গিয়েছে বাকি দুবার ঠেকিয়েছে ওবলাকের বিশ্বস্ত হাত। ৮৯ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে আসা পাসে দারুণ সুযোগ থেকে শটও নিয়েছিলেন। এবারও প্রাচীর সেই ওবলাক! টাইব্রেকারে শেষ পর্যন্ত সেই প্রাচীর গলে লক্ষ্যভেদ করেছেন রোনাল্ডো। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন দু হাত তুলে ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গিতে। সেটি পেনাল্টি মিসের জন্য। কিন্তু কস্তা যা করছিলেন, তাতে রোনাল্ডোর মুখে স্বস্তির হাসি ফুটতোই।
অপরদিকে সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে এবার ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে পর্তুগাল। শেষ ষোলোয় বেলজিয়ামকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স।