পটল থেকে শসা, কুমড়ো থেকে পান। ঘূর্ণিঝড় রেমাল (Cyclone Remal) এর ধাক্কায় তছনছ হয়ে গিয়েছে বাংলার ফসল ভাণ্ডারের একাংশ। বিশেষ করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকার সবজি চাষ ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। একই অবস্থা হুগলির সিঙ্গুর, হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার চাষবাসেরও।
ঘূর্ণিঝড় রেমাল (Cyclone Remal) এর তাণ্ডবে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ভাঙড় ও ক্যানিংয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে নানা সবজির চাষ হয়। রেমালের দাপটে প্রবল বৃষ্টিতে সেসবই ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। মূলত বেশি ক্ষতি হয়েছে মাচার ফসলের। এই সময়ে মরশুমি পটল, ঝিঙে, উচ্ছে, লাউ, কুমড়ো, শসা প্রভৃতি মাচার ফসল প্রচুর নষ্ট হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের আগাম সতর্কবার্তা থাকায় মাচার ফসলের ক্ষেত্রে চাষিরা বাড়তি সুরক্ষার বন্দোবস্ত করলেও ঝোড়ো হাওয়া ও লাগাতার বৃষ্টির দাপটে সে সবের কিছুই টেকেনি। মাচাগুলি শক্ত করে বাঁধার পরও বিঘার পর বিঘা ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পানের বরজের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, নামখানা, সাগরের বিস্তীর্ণ এলাকায় পানের চাষ হয়। ঝড়জলে পানের খেতে জল দাঁড়িয়ে গোড়া পচে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কৃষিদপ্তরের এক আধিকারিক জানান, নয়-নয় করে একশো বিঘার উপর পানের বরজ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যদিও, দুর্যোগ এখনও পুরোপুরি না কমায় চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির খতিয়ান এখনই নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। প্রচুর ওলগাছ, কলাবাগান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ঝড়ে প্রচুর পেঁপে গাছ ভেঙে পড়েছে, নষ্ট হয়ে গিয়েছে পেঁপের গুটি। নটে শাক, পুঁইশাকের গোড়ায় যাতে জল না জমতে পারে, সেজন্য তড়িঘড়ি ড্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, নদিয়ার কৃষিপ্রধান তেহট্ট মহকুমায় সেইভাবে কোথাও ফসলের ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। মহকুমা এলাকার চাষিরা যে পরিমাণ ক্ষতির আশঙ্কা করেছিলেন, তার তুলনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খুবই কম। কিছু কলা ও পেঁপে গাছ মাটি নরম হয়ে যাওয়ার ফলে উপড়ে পড়ে গিয়েছে। তবে ভুট্টা চাষে বেশ কিছু ক্ষতি হয়েছে। তবে, রেমালের দাপটে নদিয়া জেলায় বৃষ্টির পরিমাণ খুব বেশি নয়। সেক্ষেত্রে এই পরিমাণ বৃষ্টিতে লাভবান হয়েছেন পাটচাষিরা।