নিজস্ব প্রতিনিধি,তারাপীঠ: ভাদ্র মাসের এই অমাবস্যা তিথি কৌশিকী অমাবস্যা নামে পরিচিত সকলের কাছে। কথিত আছে আজ এই তিথিতে স্বর্গ ও নরকের দরজা কিছুক্ষনের জন্য উন্মুক্ত হয়। তন্ত্র ও শাস্ত্র মতে বিশেষ এই তিথিতে সাধনার মধ্যে দিয়ে কঠিন গুপ্ত সাধনার সিদ্ধি প্রাপ্তি ঘটে। ঋণাত্মক ও ধনাত্মক শক্তির আরাধনায় প্রতিবছর এই দিনকেই আদর্শ হিসাবে সাধকরা বেছে নেন। হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মে আজকের দিনে মাহাত্ম্য প্রচুর। ১২৭৪ বঙ্গাব্দে কৌশিকী এই তিথিতে তারাপীঠ মহাশ্মশানে শ্বেত-শিমূল বৃক্ষের নীচে সিদ্ধি লাভ করেন সাধক বামাক্ষ্যাপা। আজকের রাত ‘তারা রাত্রি, নামেও পরিচিত।
মার্কণ্ডেয় পুরাণ মতে, এক সময় মহিষাসুরের অত্যাচারে চিন্তিত হয়ে ওঠেন দেবগণ। তখনই দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করেন৷ কিন্তু এই শান্তি বেশিদিন দীর্ঘায়িত হয়নি। শুম্ভ- নিশুম্ভের অত্যাচারে দেবতারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে।পুরাকালে একবার শুম্ভ ও নিশুম্ভ কঠিন সাধনা করে ব্রহ্মাকে তুষ্ট করলে চতুরানন তাঁদের বর দেন, কোনও পুরুষ তাঁদের বধ করতে পারবেন না৷ শুধু কোনও অ-যোনি সম্ভূত নারী তাঁদের বধ করতে পারবেন। অর্থাৎ এমন এক নারী, যিনি মাতৃগর্ভ থেকে জন্ম নেননি, তাঁর হাতেই এই দুই অসুর ভাই-এর মৃত্যু হবে।
এরপর সকলে পার্বতীর স্মরণাপন্ন হলে, দেবতাদের রক্ষা করতে মা মহামায়া তাঁর ইচ্ছাশক্তি জাগ্রত করে, এক দেবীমূর্তির জন্ম দেন ৷ দেবী কৌশিকী অযোনিসম্ভবা ছিলেন, সেই কারণে কৌশিকী দেবীই শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধ করেন। যুদ্ধকালীন সময়ে দেবী কৌশিকীর শরীর থেকে হাজারও যোদ্ধৃ মাতৃকাকুল সৃষ্ট হয় এবং তারাই সমগ্র অসুরকুলকে বিনাশ করে। এই ঘটনাটি ভাদ্র অমাবস্যায় ঘটে। তাই পরবর্তীকালে এটি কৌশিকী অমাবস্যা নামে পরিচিত হয়।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে এবছর অমাবস্যা তিথি আরাম্ভ হয় ৯ ভাদ্র, শুক্রবার দিবা ১২টা ২৬ মিনিট।অমাবস্যা তিথি শেষ হয় .১০ ভাদ্র, শনিবার দিবা ১টা, ৪৭ মিনিট। করোনা আবহে গত দুই বছর তেমন ভক্তদের ভিড় তারাপীঠ না দেখা গেলও এবছর ভক্তদের আগমণ ঘটবে আশা করেছিলেন অনেকে। তবে, তুলনামূলক ভাবে তেমন ভিড় দেখা যায়নি এমনটাই জানিয়েছেন অনেক ভক্ত।