পুজো (Kali Puja) মানে আচার অনুষ্ঠান। পুজো মানেই একেক জায়গার একেক রকম নীতি। কিছু নিয়ম তো কয়েক শো বছর ধরে চলে আসছে (Kali Puja) । ঠিক যেমন রায়গঞ্জের দেবীনগর বাড়ির কালী পুজো (Kali Puja) । এই বাড়ির পুজোতে মূর্তি (Kali Puja) সূর্যের আলো দেখতে পায় না। কালীর পুজোর দিন এবাড়ির মূর্তি তৈরি করা শুরু হয়। রীতি অনুযায়ী খোলা আকাশের নীচেই হয় আরাধোনা হয়।
রায়গঞ্জের দেবীনগর কালীবাড়ির পুজো প্রায় পাঁচশো বছরেরও পুরনো। তৎকালীন দিনাজপুরের জমিদার মহারাজা গিরিজানাথ রায় বাহাদুর এই পুজোর প্রচলন করে। এই পুজো নিয়ে রয়েছে অনেক গল্পকথা। যা শুনলে রীতিমতো চমকে উঠতে হয়। একদিন মহারাজা ঘোড়ার গাড়ি করে এই স্থানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন।আচমকাই গাড়ির চাকা আটকে যায়। শত চেষ্টাতেও গাড়ি এগোয়নি। সেদিন রাতেই মা স্বপ্নাদেশ দেন ওই স্থানে পুজো করার। সেই নির্দেশ মেনেই রাজার হাতে পুজো শুরু হয় এখানে। জমিদার গিরিজানাথ রায় বাহাদুরের হাত ধরেই পুজো শুরু হয় এখানে।
বর্তমানে স্থানীয় মন্দির কমিটির সদস্যরাই পুজোর আয়োজন করে থাকেন। দেবীর স্বপ্নাদেশ মেনে নিয়ে মন্দির তৈরি করলেও সেই মন্দিরের কোনও ছাদ নেই। খোলা আকাশের নিচেই পূজিতা হন মা। এই পুজোর আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল দেবী সূর্যের মুখ দেখেন না। কালী পুজোর দিন সকাল থেকেই তৈরি হয় প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়। রাতে সেই প্রতিমার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে পুজো করা হয়। রাতে মন্দিরে বৈষ্ণব মতে দেবীর পুজো হয়। আর সূর্যাস্তের আগেই নদীতে সেই প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। আগে এই মন্দিরে আগে পাঠা বলি দেওয়া হতো। ১৯১৮ সাল থেকে এখানে বলি বন্ধ হয়ে যায়। এই পুজো দেখতে ভিন রাজ্য থেকেও দর্শনার্থীরা আসেন। এখানে এসে প্রার্থনা করলেই মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়। প্রাচীন রীতি মেনে এখানে এখনও পুজো হয়। এখনও পুজো সেই পুরনো নিয়ম মেনে হয়। এখানে আধুনিকতার ছোঁওয়া লাগেনি।