গত মার্চ-এপ্রিল মাসে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঁচ প্রসূতির মৃত্যুর (Saline death) সঙ্গে স্যালাইন সমস্যার যোগ থাকতে পারে বলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ওই সময় ব্যবহৃত পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির রিঞ্জাল ল্যাকটেট স্যালাইন মৃত্যুর (saline death) কারণ হতে পারে। হাসপাতালের অভ্যন্তরে এই বিষয় (Saline death) নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে।
চিকিৎসকদের দাবি, ভিন জেলা থেকে রেফার হয়ে আসা ওই পাঁচ প্রসূতি আচমকাই মারা যান, যা চিকিৎসকদের ধন্দে ফেলে দেয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। খোদ স্বাস্থ্য অধিকর্তা এসে এই ঘটনায় তদন্ত করেন। প্রসূতির মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট না হলেও, তদন্তের পরে রিঞ্জাল ল্যাকটেট স্যালাইন ও আরও কয়েকটি ওষুধের ব্যবহার বন্ধ করা হয়। সূত্র বলছে, এরপর থেকে আর কোনও প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের সুপার সঞ্জয় মল্লিক টেলিফোনে বলেন, “মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে মৃত্যুর ঘটনা বন্ধ করতে কিছু জিনিসের ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছিল, যার মধ্যে রিঞ্জাল ল্যাকটেট অন্যতম।” গাইনিকোলজি বিভাগের প্রাক্তন ডিন সন্দীপ সেনগুপ্ত এই সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “শুধু উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ নয়, আশপাশের কিছু হাসপাতালেও ওই সময় এমন মৃত্যু ঘটেছিল। চিকিৎসকদের আমরা পরামর্শ দিয়েছিলাম রিঞ্জাল ল্যাকটেট স্যালাইন ব্যবহার না করতে। আমাদের সন্দেহ ছিল বলেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে এই স্যালাইনের ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়।”
রিঞ্জাল ল্যাকটেট স্যালাইনের ব্যবহার বন্ধ করার পর প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনা বন্ধ হওয়ায়, স্যালাইনটির মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এর সঙ্গে সাম্প্রতিক মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের স্যালাইন সমস্যার যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর এবং বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, সঠিক তদন্ত ছাড়া এই ধরনের মৃত্যু ও চিকিৎসা পদ্ধতির ওপর এর প্রভাব স্পষ্ট করা সম্ভব নয়। তবে, রিঞ্জাল ল্যাকটেট স্যালাইনের বিষয়ে আরও গভীর তদন্ত এবং মান নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া জোরদার করার দাবি উঠছে।