প্রচণ্ড অস্থির রাজ্যের পরিস্থিতি। কিন্তু তারমধ্যেই দুর্গা পুজো (Durga Puja)। দুর্গা পুজো (Durga Puja) মানে এখন ষষ্ঠীতে শুরু আর দশমীতে শেষ নয়। দুর্গাপুজো (Durga Puja) মানে এখন মহালয়া থেকেই টুক টুক করে সাধারণ মানুষ বেরিয়ে পড়েন যে কটা পুজো (Durga Puja) উদ্বোধন হয়েছে সেগুলো দেখতে। বুধবার মহালয়া ছিল। মঙ্গলবার বেশ কিছু পুজো (Durga Puja) মণ্ডপের উদ্বোধন হয়েছে। বুধবারও বেশ কিছু পুজো মণ্ডপের উদ্বোধন হয়। বুধবার সন্ধ্যা থেকে কলকাতার শ্রীভূমি (Durga Puja) হোক বা কল্যাণী আইটিআই ভিড় দেখতে পাওয়া যায়। এই ভিড়ের খবর প্রকাশ্যে আসতেই চওড়া হাসি দেখতে পাওয়া যায় শাসকদলের মধ্যে। তাঁরা বক্তব্য দিতে থাকেন, মানুষ উৎসবে ফিরছেন।
আরজি করে নির্যাতিতার বিচার চেয়ে মানুষ যখন প্রায় প্রতিদিন রাস্তায় নামছেন, সেই সময় অর্থাৎ ৯ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে সাধারণ মানুষকে উৎসবে ফিরতে বলেন। তিনি বলেন, “এক মাস আন্দোলন হয়েছে। এবার উৎসবে ফিরুন।” কিন্তু সেই সময় রাজ্যের বাসিন্দাদের একাংশ মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগড়ে দেন। তাঁরা উৎসবে ফিরবেন না বলেও জানিয়ে দেন। তারপর অনেক জল গড়িয়েছে। আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে এক একটা মিছিল অনেক অর্থ বহন করে দেয়। আরজি করের মিছিলের দৈর্ঘ্য প্রমাণ করে দেয়, সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশ বিচার চেয়ে এখনও রাস্তায় আছে।
কিন্তু এই পরিস্থিতির মধ্যে মহালয়ার আগের দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রীভূমির পুজো উদ্বোধন করেন। এছাড়াও মহালয়ার দিন একাধিক পুজোর উদ্বোধন হয়। মহালয়ার দিন সন্ধ্যার পর থেকে উদ্বোধন হওয়া পুজো মণ্ডপে ভিড় দেখতে পাওয়া যায়। আর পুজোয় জন-সাধারণের এই ভিড়কে কার্যত ‘নৈতিক জয়’ হিসাবে দেখতে শুরু করেছে তৃণমূল। তৃণমূল যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য থেকে মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী সকলেই বললেন, ‘বাংলা উৎসবেই ফিরেছে।’
তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য টুইট করে লেখেন, ‘শ্রীভূমি থেকে কল্যাণী আইটিআই মহালয়ার দিন থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে জনজোয়ার। যারা উৎসব বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন,উৎসবে ফিরছি না বলে পিওর বাম সুলভ স্লোগান তুলেছিলেন, সাধারণ মানুষ তাদের মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছেন। মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন গরিবের পেটে লাথি মেরে উৎসব বয়কট কোনও সুস্থ মানসিকতার লক্ষণ নয়। মুখ্যমন্ত্রী সেই গরিব গুলোর জন্যেই বলেছিলেন উৎসবে আসুন..বলেননি, বিচার ভুলে উৎসবে ফিরুন..।’
অন্যদিকে, অরূপ চক্রবর্তী লিখেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়, “উৎসবে ফিরছি না কীভাবে মহালয়াতেই জনসমুদ্র হয়ে গেল! কল্যাণী লুমিনাসেই যদি এই অবস্থা হয় তাহলে ত্রিধারা-সুরুচি বড়িশা-বাদামতলা-নাকতলার ফিতে কাটা হয়ে গেলে কী হবে?….সুবিধাবাদী মাকুর দল আবার এই সুযোগে লাল শালু খাটিয়ে টাকা কামাতে প্যান্ডেলের পাশে বুকস্টলের বাঁশ বাঁধতে শুরু করে দিয়েছে।”