ফের ভয়াবহ বিস্ফোরণ রাজ্যে। নৈহাটি,আমডাঙ্গা পর ভূপতিনগর ও চম্পাহাটির স্মৃতি উস্কে ফের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ। ঝলসে গেল গোটা কারখানা। নদিয়ার কল্যাণীর ঘটনা (Firecracker Factory Blast in Kalyani)। শুক্রবার দুপুরে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এখনও পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।শুক্রবার দুপুরে কল্যাণী পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের রথতলা এলাকায় একটি বাজি কারখানায় আগুন লাগে। আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয়েছে চার মহিলার। আহত আরও এক মহিলা। তাঁকে কল্যাণী জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মহিলার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে। তিনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। মৃতদের সকলেই ওই কারখানার কর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। মৃতদের নাম ভারতী চৌধুরী বয়স ৬০, রুমা সোরেন বয়স ৩৫ , অঞ্জলী বিশ্বাস ৬০ এবং বছর চল্লিশের দুর্গা সাহা ।
বিস্ফোরণের জেরে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে কারখানাটি। দমকল কর্মীদের পাশাপাশি উদ্ধারকার্যে হাত লাগিয়েছেন স্থানীয়রা। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকা জুড়ে।
এই বিস্ফোরণের ঘটনায় রাজ্যে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। নৈহাটি, আমডাঙ্গার পর ভূপতিনগর ও চম্পাহাটি এবং ডায়মন্ড হারবারে একই ধরনের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের জেরে প্রাণহানি ঘটেছে। তবে, এসব ঘটনার পরেও প্রশাসনের সতর্কতা এবং ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কোথায় ছিল প্রশাসনের নজরদারি? এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
তবে একটি আশ্চর্যজনক তথ্য উঠে এসেছে স্থানীয় কাউন্সিলর সুব্রত চক্রবর্তীর বক্তব্যে। তিনি দাবি করেন, তিনি এধরনের কোন কারখানার কথা জানতেন না, এবং বিস্ফোরণের পরই বিষয়টি তাঁর দৃষ্টিতে আসে। তিনি জানান, এটি কোনো কারখানা নয়, বরং একটি বাড়ির মধ্যে বাজি তৈরি হচ্ছিল।
এদিকে, স্থানীয় বিধায়ক অম্বিকা রায়ের মন্তব্য, পুলিশ এবং প্রশাসন জানত, কিন্তু কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়নি। তিনি বলেন, “পুলিশ সব জানত, তবুও ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা শুধু ভগবানের ভরসা নিয়ে বসে আছি। আইন-শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই।”
এটি কোনও নতুন ঘটনা নয়। গত বছর ২০২৩-এ খাদিকুল, বজবজ, ইংরেজবাজার, নীলগঞ্জের মতো এলাকায় একই ধরনের বিস্ফোরণে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। তবুও প্রশাসন কি সেসব থেকে শিক্ষা নিলো? প্রশ্ন উঠছে, এসব ঘটনায় প্রশাসনের চোখে টনক কেন পড়ছে না?
এই ধারাবাহিক ঘটনায় অবৈধ বাজি কারখানাগুলি নিয়ে রাজ্যে আবারও বিতর্ক তীব্র হয়েছে। রাজ্য সরকার ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে সতর্কতা জানিয়েছিল, কিন্তু তারপরও বারবার এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। জনগণের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে এবং এটি প্রশাসনকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।