ভারতীয় খাদ্য নিগম (এফসিআই) দ্বারা রাজ্যগুলিতে পাঠানো মোট পরিমাণ রেশনের (Free Ration) ২৮ শতাংশ কখনও সঠিক মানুষদের কাছে পৌঁছায়নি। একটি গবেষণাপত্রে এ তথ্য উঠে এসেছে। ইকনোমিক থিঙ্ক ট্যাঙ্কের গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে যে এটি প্রায় পুরো দেশে ৬৯,০০০ কোটি টাকার ক্ষতি করেছে।
উত্তরপ্রদেশের কথা উল্লেখ করে গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে যে ৩৩ শতাংশ রেশন (Free Ration) অভাবীদের কাছে পৌঁছায়নি। ইংরেজি সংবাদপত্র টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন অনুসারে, সমস্ত রাজ্যের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ এই ক্ষেত্রে ১ নম্বর স্থানে রয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে যে, পিডিএস-এর জন্য আধার কার্ডের সঙ্গে সুবিধাভোগীদের রেশন কার্ড সংযুক্ত করার ফলে বিতরণে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তবে, এই সুবিধা এখনও সমস্ত চাহিদাসম্পন্নদের কাছে পৌঁছয়নি।
ডঃ রঞ্জনা রায়, ডঃ অশোক গুলাটির Indian Council for Research on International Economic Relations (ICRIER) রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, সারা ভারত জুড়ে চাহিদাসম্পন্ন মানুষদের কাছে বিনামূল্যে রেশন (Free Ration) পৌঁছাতে না পারার ক্ষেত্রে উত্তর প্রদেশ ১ নম্বর স্থানে রয়েছে। যোগী রাজ্যে ২৮.৪২ শতাংশ চাল অভাবি মানুষের কাছে পৌঁছতে পারেনি।
২০১৯-এর প্রথম দশ মাসে, পিডিএস-সম্পর্কিত দুর্নীতির মোট মামলার অর্ধেকেরও বেশি উত্তরপ্রদেশ এবং বিহার থেকে এসেছে। লোকসভায় এক প্রশ্নের জবাবে তৎকালীন ভোক্তা বিষয়ক, খাদ্য ও গণবন্টন প্রতিমন্ত্রী দানভে রাও সাহেব দাদারাওয়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গবেষণাপত্রে এই দাবি করা হয়েছে। সেই সময় পিডিএস সংক্রান্ত দুর্নীতির ৮০৭টি মামলার মধ্যে ৩২৮টিই ছিল শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশের।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ডিজিটাল ট্র্যাকিং ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও মানুষ এর সুবিধা পাচ্ছেন না। গবেষণাপত্রে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, পিডিএস ব্যবস্থায় কেবল নজরদারি বাড়ানো নয়, প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তনও করা উচিত। গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে যে হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং মহারাষ্ট্রে রেশন খোলা বাজারে পাঠানো হচ্ছে।
তবে ২০১১-১২ সালের তুলনায় এই সংখ্যা অনেক বেশি। তখন তা ছিল ৪৬ শতাংশ। কিন্তু সাম্প্রতিক তথ্য ইঙ্গিত দেয় যে, ভর্তুকিযুক্ত খাদ্যশস্যের (Free Ration) একটি বড় অংশ এখনও সঠিক চাহিদাসম্পন্নদের কাছে পৌঁছচ্ছে না।গবেষণাপত্রে আরও বলা হয়েছে যে, ২০১৬ সালে রেশন দোকানগুলিতে পয়েন্ট অফ সেল (পিওএস) মেশিন প্রবর্তনের ফলে পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়া হয়েছে, তবে পরিস্থিতি এখনও ভাল নয়।
২০২২ সালের আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত এইচসিইএস এবং এফসিআই-এর তথ্যের ভিত্তিতে, গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ২ কোটি টন চাল ও গম চাহিদাসম্পন্নদের কাছে পৌঁছায়নি। ভারত বিশ্বের বৃহত্তম রেশন বিতরণ ব্যবস্থা (Free Ration) পরিচালনা করে, যার মধ্যে ৮১.৪ কোটি মানুষকে পিডিএসের মাধ্যমে চাল এবং গম দেওয়া হয়।