আরজি কর কাণ্ডে যখন উত্তাল হয়ে উঠেছিল বাংলা (Health Department)। সেই সময় জানা যায় আরজি করের নির্যাতিতা তরুণী টানা ৩৬ ঘণ্টা কাজ করেছিলেন (Health Department)। সেই সময় অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন, একজন চিকিৎসককে কেন টানা ৩৬ (Health Department) ঘণ্টা কাজ করতে হয়? এবার সেই চিকিৎসকদের কাজের সময় নিয়ে নির্দেশিকা জারি করল স্বাস্থ্য ভবন (Health Department)। স্বাস্থ্য ভবনের (Health Department) তরফে জানানো হয়েছে, ১২ ঘণ্টার বেশি কোনও চিকিৎসককে ডিউটি করতে হবে না। পাশাপাশি চিকিৎসকরা কখন প্রাইভেট প্রাকটিস করতে পারবেন, তারও উল্লেখ নির্দেশিকায় রয়েছে (Health Department)।
রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবন সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলিতে চিকিৎসকদের দায়িত্ব নিশ্চিত করতে কঠোর নির্দেশিকা জারি করেছে। সপ্তাহে ছ’দিন উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি, রাতে সিনিয়র ফ্যাকাল্টির উপস্থিতি নিশ্চিত করার ওপরও বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক ঘটনার সময় সিনিয়র চিকিৎসকের অনুপস্থিতির প্রেক্ষিতে এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।চিকিৎসকদের একাংশ অবশ্য অভিযোগ করেছেন, প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না বাড়িয়েই এই নির্দেশিকা চাপানো হয়েছে, যা তাঁদের আন্দোলন দমন করার একটি প্রচেষ্টা।
সম্প্রতি নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে চিকিৎসকদের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন করেন। এরপরই স্বাস্থ্য ভবন চিকিৎসকদের দায়িত্ব স্পষ্ট করে এবং গাফিলতির ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে নতুন নির্দেশিকা জারি করে।
নির্দেশিকায় চিকিৎসকদের জন্য যা বলা হয়েছে:
১. অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরদের ইমার্জেন্সি, অন-কল এবং ওয়ার্ড ডিউটির পাশাপাশি শিক্ষক-চিকিৎসকের ভূমিকা পালন করতে হবে।
২. প্রতিটি ইউনিটে সকাল ও সন্ধ্যায় অন্তর্বিভাগ ও ইমার্জেন্সি পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ড পরিদর্শন বাধ্যতামূলক।
৩. রোগী ভর্তির দিন দুপুর ২ টো পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ইউনিটের সিনিয়র চিকিৎসকদের ওপিডিতে থাকতে হবে।
৪. প্রতিটি ইউনিটের অন্তত একজন চিকিৎসককে প্রতিদিন দু’বার রোগীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে হবে।
৫. বিভাগীয় প্রধানকে নিজের ইউনিট ছাড়াও অন্য ইউনিটের রোগীদের পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
৬. অ্যানাটমি, ফিজিওলজি, এবং বায়োকেমিস্ট্রির চিকিৎসকদের জেনারেল ওপিডি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৭. সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪ টার মধ্যে প্রাইভেট প্র্যাক্টিস করা যাবে না।
স্বাস্থ্য ভবন জানিয়েছে, কর্তব্যে গাফিলতি প্রমাণ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি বিষয়টি রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল বা জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের (এনএমসি) নজরে আনাও হতে পারে। এই নির্দেশিকায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য পরিষেবার উপর সরাসরি নজরদারি বাড়ানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তবে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের মতে, এতে তাঁদের উপর বাড়তি চাপ তৈরি করা হচ্ছে।