নিজস্ব প্রতিনিধি, ব্যারাকপুরঃ না হল না। খুশির দিন আর দেখা হল না। বেঁচে থাকলে হয়ত আজই হতে পারত তাঁর ১৮ বছরের জীবনে অন্যতম খুশির দিন। উচ্চমাধ্যমিকে তার গ্রেড ‘এ’। মোট প্রাপ্ত নম্বর ৩৬৯। শতাংশের হিসেবে ৭৫.২৩। আর তাঁর রোল নম্বর ৪৬০৯১১।
রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে কাঠগড়ায় তুলে চলে গিয়েছে শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়। আর তার মৃত্যুর তদন্ত চেয়ে এখন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তার বাবা-মা। হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরেও সন্তানকে বাঁচাতে পারেননি ইছাপুরের চট্টোপাধ্যায় দম্পতি। একটু চিকিৎসা পাওয়ার জন্য সেও সেই ভোরবেলা থেকে বাবা মায়ের সাথে নিজের জীবনের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল।
কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে ১৮ বছরের শুভ্রজিতের। তাঁর বাবা-মায়ের দাবি, কোনও করোনা পরীক্ষাই করেনি কলকাতার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। উল্টে বেলঘরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালের কয়েক মিনিটে করা করোনা পরীক্ষার রিপোর্টকে মান্যতা দিয়েই তাদের ছেলেকে প্রথমে ভর্তিই নিতে চায়নি রাজ্যের ওই নামী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি।
শুভ্রজিতের সত্যি যদি কোভিড পজিটিভ হয় তবে সেই তথ্য স্বাস্থ্যদফতরের কাছে ছিল না কেন? গত শুক্রবার শুভ্রজিতকে ভর্তি নেয়নি রাজ্যের কোভিড হাসপাতাল সাগর দত্ত। মুখের সামনে জানিয়েছে,না না, বেড নেই। বেলঘরিয়া থানার সাহায্য চেয়েও সেখানে বেড পাননি বলে বাবা-মায়ের অভিযোগ। তাই বেলঘরিয়া থানাতেও অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। অভিযোগ জানানো হয়েছে কামারহাটি ইএসআই, বেলঘরিয়ার বেসরকারি হাসপাতাল, সাগর দত্ত হাসপাতাল ও বেলঘরিয়া থানার আইসি-র বিরুদ্ধে।
মৃত্যুর পরেও শেষ হয়নি হয়রানির। শুভ্রজিতের দেহ পেতে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকতে হয়েছে মেডিকেল কলেজে। আদালতের নির্দেশই পুলিশ মর্গে ময়নাতদন্তের পর প্লাস্টিকে মোড়া ছেলের মুখ এক ঝলক দেখতে পেয়েছিলেন হতভাগ্য ওই বাবা-মা।