ভারতীয় বায়ুসেনার (IAF Aircraft) দুটি বিমানের দুর্ঘটনা একই দিনে ঘটায় দেশজুড়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। দিনটির শুরু হয় হরিয়ানার পঞ্চকুলা থেকে একটি বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান জাগুয়ারের দুর্ঘটনার মাধ্যমে, আর তারপর সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের বাগডোগরায় ঘটে আরেকটি বিমান দুর্ঘটনা – এইবার ছিল AN-32 পরিবহন বিমানটি। একাধিক দুর্ঘটনার ঘটনায় ভারতীয় সেনা বাহিনী এবং জনগণের মাঝে চিন্তা সৃষ্টি হয়েছে, যদিও প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানা গেছে, বিমানে থাকা ক্রিউ সদস্যরা নিরাপদে আছেন।

পঞ্চকুলায় জাগুয়ারের দুর্ঘটনা
শুক্রবার বিকেলের দিকে, হরিয়ানার পঞ্চকুলা থেকে উড্ডয়নকারী একটি বায়ুসেনার জাগুয়ার যুদ্ধবিমান প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে বিধ্বস্ত হয়। জানা গেছে, বিমানের পাইলট উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই বিমানে সমস্যা অনুভব করেন এবং বিমানে কোন ধরনের বিপদের আশঙ্কা দেখা দিলে, তিনি সেটি লোকালয় থেকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান। যদিও, তা সত্ত্বেও বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। তবে, পাইলটের সাহসিকতার কারণে তিনি ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদে বের হতে সক্ষম হন, এবং পরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পাঠানো হয়। এই দুর্ঘটনার পর, ভারতীয় সেনা বাহিনী তদন্ত শুরু করেছে।
বাগডোগরায় AN-32-এর ক্র্যাশ ল্যান্ডিং
এই ঘটনা ঘটার কিছু ঘণ্টা পর, পশ্চিমবঙ্গের বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে খবর আসে আরেকটি দুর্ঘটনার। ভারতীয় বায়ুসেনার একটি পরিবহন বিমান AN-32 ছিল, যেটি অবতরণের সময় ক্র্যাশ ল্যান্ডিংয়ের শিকার হয়। তবে, সৌভাগ্যবশত বিমানে থাকা চারজন ক্রিউ সদস্য নিরাপদে আছেন এবং বিমানে কোনো যাত্রী ছিল না। বিমানের জরুরি অবতরণের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়, তবে প্রযুক্তিগত সমস্যা, সম্ভবত, এতে ভূমিকা রেখেছে। এই দুর্ঘটনার পরেও, যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ায় জনমনে কিছুটা স্বস্তি এসেছে।
দুটি দুর্ঘটনা ও এর পরিণতি
এ দিনের দুটি দুর্ঘটনা ভারতীয় বায়ুসেনার ক্ষেত্রে একটি অস্বস্তিকর ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত, পঞ্চকুলায় যে জাগুয়ার বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে, এটি এক ধরনের যুদ্ধবিমান, যা সেনার বিভিন্ন রুটিন প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত হয়। একদিকে যেমন এই বিমানের প্রযুক্তিগত সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে বাগডোগরার AN-32-এর পরিস্থিতি পুরোপুরি আলাদা, যেখানে পরিবহন বিমানটির জরুরি অবতরণকে একেবারে চরম বিপদের চেয়ে একটি সংবেদনশীল পরিস্থিতি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এই দুটি দুর্ঘটনার একযোগী ঘটনার পর, ভারতীয় সেনা বাহিনীর কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং আরও বিশদভাবে ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করছেন। যদিও দুর্ঘটনাগুলির পর সব ক্রিউ সদস্যরা নিরাপদে আছেন, তবুও এই ধরনের দুর্ঘটনা বায়ুসেনার রক্ষণাবেক্ষণ এবং প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার উপর নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
সামরিক বিমানগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
এ ধরনের দুর্ঘটনা ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিমানের প্রযুক্তিগত সমস্যা, প্রশিক্ষণের মান, সুরক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন – এসব বিষয়গুলির দিকে পুনরায় নজর দেওয়া জরুরি। বিশেষত, যুদ্ধবিমান ও পরিবহন বিমানের মধ্যে অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রযুক্তিগত সমস্যার সম্ভাবনা থাকে, যা সময়োপযোগী রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রস্তুতির মাধ্যমে অনেকাংশে এড়ানো সম্ভব।
ভারতীয় বায়ুসেনা সবসময়ই তার প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এবং বিমান রক্ষণাবেক্ষণে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তবে, এই ধরনের দুর্ঘটনাগুলি ভবিষ্যতে আরও ভাল প্রশিক্ষণ এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে ইঙ্গিত দেয়, যাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। বায়ুসেনার উড়ান নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী করার জন্য তৎকালীন এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা ও তদন্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, শুধুমাত্র প্রতিক্রিয়া নয়, বরং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে।