ইতিহাস থেকে জানা যায় প্রায় ৩০০বছর আগে ওড়িশার বাসিন্দা মগ্নীনারায়ন চৌধুরী ডেমুরিয়াতে বসবাসের উদ্দেশ্যে আসেন। তাঁর এক অন্যতম ইচ্ছা ছিল রথের সময় তীর্থযাত্রীদের পুরী দর্শনে নিয়ে যাওয়া। তিনি তাঁর এই ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপায়ন করতে প্রত্যেক বছর তিনি বহু তীর্থযাত্রীকে পায়ে হেঁটে পুরী দর্শনে নিয়ে যেতেন। এরপর তিনি বৃদ্ধ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও তাঁর ইচ্ছাকে প্রতিহত করেননি। একবার তিনি তীর্থযাত্রীদের পুরী নিয়ে যাওয়ার সময় পথে ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে স্বপ্নের মধ্যে দেখা দেন প্রভু জগন্নাথদেব। প্রভু জগন্নাথ মগ্নীনারায়নকে স্বপ্নের মধ্যে বলেন সে যেন আর কষ্ট করে পুরী না আসে,বরং তার বাড়ির কাছে যেন জগন্নাথদেবের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে তাতেই মগ্নীনারায়নের পুরী আসার পূর্ণ লাভ হবে।এরপর মগ্নীনারায়ন বাড়ি ফিরে গিয়ে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার মাটির মূর্তি গড়ে পূজোপাঠ শুরু করেন।এরপর মগ্নীনারায়নের মৃত্যুর পরে ১৭৪৩সালে বর্গীরা অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা দখল করে নেয়।যা ১৭৫২সাল পর্যন্ত এই দখল অব্যাহত থাকে। বর্গীরা হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও তার এইসময় প্রচুর পরিমাণে হিন্দু মন্দির লুঠ করতো। সেই সময় মগ্নীনারায়নের উত্তরাধিকারীরা জগন্নাথ,বলরাম, সুভদ্রার নিরাপত্তার জন্য প্রতিবেশী করুণাকরন পাহাড়ির বাড়িতে জগন্নাথ,বলরাম, সুভদ্রাকে লুকিয়ে রাখেন। কিন্তু প্রত্যেকদিন মগ্নীনারায়নের পরিবারের লোকজনেরা ভোগ রান্না করে এখানে জগন্নাথ,বলরাম, সুভদ্রার কাছে নিবেদন করে যেতেন। এরপর কালক্রমে জগন্নাথ,বলরাম, সুভদ্রা আর মগ্নীনারায়নের বাড়িতে ফিরে আসেননি। তখন জলামুঠের জমিদার যাদবরাম রায় জগন্নাথ,বলরাম, সুভদ্রাকে প্রভূত পরিমাণে সম্পত্তিতে ভূষিত করেন এবং করুণাকরন পাহাড়িরা চৌধুরী উপাধি নিয়ে জগন্নাথদেবের সেবার কাজে নিয়োজিত থাকেন।