পহেলগাঁও হামলার পর ভারত পাকিস্তানের মেরুদণ্ড (Ind-Pak Tension) ভেঙে দেওয়ার জন্য একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে। জানা গেছে যে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করার পর ভারত চেনাব নদীর জল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। জম্মুর বাগলিহার এবং রাইসিতে নির্মিত সালাল বাঁধের গেট বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এমন পরিস্থিতিতে ভারত দুই দিনে দুটি বাঁধ তৈরি করে চেনাবের জল পাকিস্তানে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এর আগে সরকার সিন্ধু নদীর জল বন্ধ করে দিয়েছিল। চেনাব নদীর উপর বাগলিহার বাঁধ থেকে পাকিস্তানে প্রবাহিত জল বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। একই সাথে, ঝিলাম নদীর কিষাণগঙ্গা বাঁধ বন্ধ করার পরিকল্পনাও করা হচ্ছে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর মতে, ভারত জম্মুর রামবানে অবস্থিত বাগলিহার জলবিদ্যুৎ বাঁধ এবং উত্তর কাশ্মীরের কিষাণগঙ্গা জলবিদ্যুৎ বাঁধের মাধ্যমে তার দিকে জল ছাড়ার সময় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এর অর্থ হল, এই বাঁধগুলির মধ্য দিয়ে পাকিস্তানে পৌঁছানো জল কোনও পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই হ্রাস পেতে পারে। পহেলগাঁও হামলার পর, ভারত সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করেছিল।

সিন্ধু জল চুক্তি কী?
রামবানের বাগলিহার বাঁধের গেট বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে চেনাব নদীর প্রবাহ অনেকটাই কমে গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চেনাবের জল হ্রাস কৃষি ও পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ১৯৬০ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে (Ind-Pak Tension) সিন্ধু জল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এর আওতায়, সিন্ধু নদী এবং এর উপনদীগুলির জল দুই দেশের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে, ভারতের বাগলিহার বাঁধ প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে বিরোধের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও, কিষাণগঙ্গা বাঁধ আইনি ও কূটনৈতিক তদন্তের মুখোমুখি হয়েছে।
সিন্ধু জল চুক্তির অধীনে, পাকিস্তানকে পশ্চিমাঞ্চলীয় নদীগুলির (সিন্ধু, চেনাব এবং ঝিলাম) নিয়ন্ত্রণ দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান সিন্ধু নদী ব্যবস্থার ৯৩ শতাংশ জল সেচ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করে। পাকিস্তানের অর্থনীতি কৃষির উপর নির্ভরশীল। যেখানে পাকিস্তানের কৃষিক্ষেত্র ৮০ শতাংশ ভারতের উপর নির্ভরশীল।
হতাশ পাকিস্তান হুমকি দিচ্ছে
সিন্ধু জল চুক্তি বাতিল হওয়ার পর থেকে পাকিস্তান (Ind-Pak Tension) আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। কখনও সে তাকে পারমাণবিক হামলার হুমকি দেয়, আবার কখনও বিশ্বব্যাংকের কাছে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানায়। সিন্ধু জল চুক্তি বাতিলের পর, প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো বলেছিলেন যে হয় আমাদের জল সিন্ধু নদীতে প্রবাহিত হবে, নয়তো তাদের রক্ত প্রবাহিত হবে। পাকিস্তান ক্রমাগত চুক্তি স্থগিতের বিষয়টিকে যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে অভিহিত করে আসছে।