টি-২০ র্যাংকিংয়ের শীর্ষে থাকা ভারত ১৮-তে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের (IND Vs USA) কাছে হারবে দুঃসাহসীরাই এই ভবিষ্যদ্ববাণী করতে পারেন। তবে ম্যাচটা যেখানে হচ্ছে, সেখানে হতে পারে যে কোনো কিছুই। এই মাঠে হওয়া আগের চার ম্যাচের দিকে চোখ রাখলে রীতিমতো ভয় পেতে হয়। চার-ছক্কার টি-২০ ফরম্যাট। অথচ এখানে ইনিংসপ্রতি গড়ে উঠেছে ১০৬.২৫ রান! সর্বোচ্চ ১৩৭ আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে করতে পেরেছিল কানাডা। এখানেই পাকিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ১১৯ রানে গুটিয়ে যাওয়া ভারত জিতেছিল ৬ রানে। সোমবার দক্ষিণ আফ্রিকার ছুড়ে দেওয়া ১১৪ রানের লক্ষ্যও ছুঁতে গিয়ে বাংলাদেশ হেরেছে চার রানে। আইরিশরা এখানে ভারতের কাছে অলআউট হয়েছে মাত্র ৯৬ রানে। নিউ ইয়র্কের এই উইকেট তাই ব্যাটারদের কাছে হয়ে উঠেছে রীতিমতো দুর্ভেদ্য।
এমন অদ্ভুতুড়ে উইকেটে তাই খুব স্বস্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে খেলতে নামার সুযোগ নেই ভারতের। বিরাট কোহলি, সূর্যকুমার যাদবের মতো মারকুটে ব্যাটারদের ব্যাটে রান আসেনি গত দুই ম্যাচে। আইরিশদের বিরুদ্ধে ফিফটি হাঁকানো ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেভাবে সুযোগ করতে পারেননি। আইপিএল-এ দুর্দান্ত ফর্মে থাকা শিভম দুবের ব্যাটে হঠাৎ করেই রানের খরা। সৌরভ নেত্রভালকর, আলি খানদের বিরুদ্ধে আজ তাদেরও নিতে হবে রান তোলার দায়িত্ব।
যে কোনও সংস্করণে এটাই দুদলের প্রথম সাক্ষাৎ। এদিনের ম্যাচে বড় নিয়ামক হয়ে দেখা দিতে পারে টস। আগের দুই ম্যাচেই টস জিতে শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হেসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভারতীয় বংশোদ্ভূত অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেল। অন্যদিকে ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা প্রথম ম্যাচে টসে জিতলেও দ্বিতীয়টিতে হেরেছেন।
দুদলকে বাড়তি সাহস দিচ্ছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাওয়া কষ্টসাধ্য জয়। যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য আজই প্রথম এই মাঠে বিশ্বকাপের ম্যাচ খেলতে নামছে। আগের দুটি ম্যাচ তারা খেলেছে ডালাসে। কানাডার ১৯৪ রান তারা টপকে গিয়েছিল ৭ উইকেট ও ১৪ বল হাতে রেখে। অ্যারন জোনস ৪০ বলে ৯৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। এছাড়া অ্যান্ড্রিস গাউসের ব্যাট থেকে আসে ৪৬ বলে ৬৫ রানের ইনিংস। একই মাঠে পাকিস্তানের সমান ১৫৯ তুলে ম্যাচের ভাগ্য যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে গিয়েছিল সুপার ওভারে। সেই ম্যাচে অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেল ফিফটি হাঁকান। জোনসের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৩৬। এরপর সুপার ওভারে যুক্তরাষ্ট্র ১৮ রান তোলে। যেটা ইফতেখার আহমেদ ও শাদাব খান পারেননি টপকে যেতে। নেত্রভালকার ইফতেখারকে বিদায় করার পাশাপাশি খরচ করেন ১৩ রান। অর্থাৎ আজ দুদলের লড়াইয়ের মধ্যে জমে উঠতে পারে অ্যারন জোনস ও জাসপ্রিত বুমরার ডুয়েলটাও। তবে এসব লড়াই তুচ্ছ হয়ে উঠতে পারে উইকেটের অদ্ভুতুড়ে আচরণ।
নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ দুদল মুখোমুখি হবে সুপার এইট নিশ্চিত করার লক্ষ্যে। যারা জিতবে তারা চলে যাবে পরের ধাপে। হেরে গেলে অপেক্ষায় থাকতে হবে এ গ্রুপের শেষ ম্যাচের জন্য। দুদলই আজ মাঠে নামবে পাকিস্তান বধের তৃপ্তি সঙ্গী করে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো ভারতও জিতেছে তাদের শুরুর দুই ম্যাচ। আয়ারল্যান্ডকে ৮ উইকেটে হারানোর পর রোহিত শর্মারা লো-স্কোরিং ম্যাচে পাকিস্তানকে হারায় ৬ রানে। যুক্তরাষ্ট্রের পর ভারতের কাছে হেরে গ্রুপপর্ব থেকে বিদায়ের শঙ্কায় পাকিস্তান। আজ যুক্তরাষ্ট্র জিতে গেলে বাবর আজমদের জন্য সুপার এইটে যাওয়ার পথটা আরও সংকুচিত হবে।