ইংল্যান্ডের হয়ে প্রথম টেস্ট খেলতে নামা পেসার গুস অ্যাটকিনসনের বলটি ডিপ মিড উইকেট দিয়ে উড়িয়ে মারলেন জেইডেন সিলস। সীমানার ওপর তালুবন্দি করলেন বেন ডাকেট। এর সাথেই শেষ হয়ে গেল ইংলিশ পেস কিংবদন্তি জেমস অ্যান্ডারসন(James Anderson)-র আন্তর্জাতিক কেরিয়ার। ২০০৩ সালে লর্ডসের মাঠেই দেশের হয়ে টেস্ট কেরিয়ার শুরু করেছিলেন সতীর্থদের প্রিয় ‘জিমি’। ক্রিকেটের মক্কাতেই নিজের কেরিয়ারের ইতি টানলেন। একমাত্র পেসার হিসেবে টেস্টে ৭০৪ উইকেট শিকারী ৪২ বছর বয়সী অ্যান্ডারসনের শেষটা হল জয় দিয়েই। লর্ডস টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ হেরে গেল ১১৪ রানের বড় ব্যবধানে।
ম্যাচের দ্বিতীয় দিন শেষেই ইংল্যান্ডের জয় একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। তৃতীয় দিনে প্রয়োজন ছিল আর ৪ উইকেট। ক্যারিবিয়ানদের শেষ উইকেট যাতে অ্যান্ডারসন (James Anderson) নিতে পারেন, এজন্য তাকে দিয়েই বোলিং করাচ্ছিলেন অধিনায়ক বেন স্টোকস। তবে শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। শেষদিকে জিমিকে কিছুটা হলেও অন্যমনস্ক লাগছিল। বাইশ গজকে বিদায় জানানোর দুঃখবোধ হয়তো গ্রাস করেছিল তাকে। ২১ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার শেষ হলো মাথা উঁচু করেই।
লর্ডস টেস্টের তৃতীয় দিন সকালে দুই দলের ক্রিকেটাররা জিমিকে গার্ড অব অনার দেয়। ম্যাচের আগে বলেছিলেন তিনি আবেগকে সংবরণ করবেন। কথা রেখেছেন অ্যান্ডারসন। মনের ভেতর ঝড় বয়ে গেলেও তাকে ভেঙে পড়তে দেখা যায়নি। সব আলো নিজের দিকে কেড়ে নিয়ে হাসিমুখেই মাঠ ছেড়েছেন। গ্যালারিতে বসা তার স্ত্রীর চোখ তখন ছলছল করছিল। গোটা গ্যালারি দাঁড়িয়ে তুমুল করতালি আর হর্ষধ্বনির মাধ্যমে বিদায় জানাচ্ছিল ইংলিশ পেস কিংবদন্তিকে।
৪১ বছর বয়সী অ্যান্ডারসন জীবনের শেষ টেস্টেও বল হাতে সাফল্য পেয়েছেন। প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন ৩২ রানে তিনটি। এই টেস্টেই তিনি ৫০ হাজার ডেলিভারির মাইলফলক ছুঁয়েছেন। তার মোট উইকেটসংখ্যা এখন ৭০৪। আর পাঁচটি উইকেট পেলেই ছাড়িয়ে যেতেন অস্ট্রেলিয়ার প্রয়াত লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্নকে (৭০৮)। সেটা না পারলেও দীর্ঘ কেরিয়ারে তিনি যা কীর্তি গড়েছেন- তা ক্রিকেট ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে।