পিঠের চোট মাঝে বড্ড ভুগিয়েছে যশপ্রীত বুমরাকে (Jasprit Bumrah)। নিউজিল্যান্ড সফল অস্ত্রোপচারের পর দীর্ঘদিন পুনবার্সনপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের আগস্টের মাঝামাঝি সময় বুমরা সব মিলিয়ে মাঠের বাইরে ছিলেন প্রায় ১১ মাস। চোটের কারণেই ভারতের পেস বোলিং বিভাগের প্রধান এই অস্ত্র ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে পারেননি।
তবে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে মাঠে ফেরার পর বুমরাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ভারতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের পর থেকে এখন পর্যন্ত তিন সংস্করণ মিলিয়ে ২৫ ম্যাচে ৬৩ উইকেট নিয়েছেন। এ বছর এখনো কোনও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি না খেললেও সদ্য সমাপ্ত আইপিএলে ২০ উইকেট নিয়ে হয়েছিলেন তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। কমপক্ষে ১০ ওভার বোলিং করেছেন এমন বোলারদের মধ্যে তাঁর ইকোনমি রেট ছিল সবচেয়ে কম (৬.৪৮)। সেরা ছন্দে থাকা বুমরাকে নিয়ে তাই ভারতও এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বড় কিছুর স্বপ্ন দেখছে।
চোট থেকে সেরে উঠেই শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটে সেরা ছন্দে ফেরা যে কারও জন্য কঠিন। তবে বুমরা সেই কঠিন কাজটিই সহজ করেছেন সাধারণ দর্শনের দিকে মনোনিবেশ করে, যা তাঁর প্রত্যাবর্তনের পথও মসৃণ করেছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে আজ বিশ্বকাপের শেষ প্রস্তুতি ম্যাচের আগে সে কথাই জানিয়েছেন বুমরা। আইসিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ৩০ বছর বয়সী তারকা ফাস্ট বোলার বলেছেন, ‘যেহেতু আমাকে চোটের ধাক্কা কাটিয়ে আসতে হয়েছে, তাই যতটা সম্ভব খেলাটিকে উপভোগ করার দিকে মনোযোগ দিয়েছি। কিছু জিনিস আমার পক্ষে যাবে, কিছু জিনিস পক্ষে যাবে না। ম্যাচ ঘিরে মনে এমন নানা ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। আমি সেটা বাদ দিয়ে প্রক্রিয়া ঠিক রাখার চেষ্টা করেছি।’
Timber Striker Alert 🚨
A Jasprit Bumrah special 🎯 🔥
Drop an emoji in the comments below 🔽 to describe that dismissal
Follow the match ▶️ https://t.co/X85JZGt0EV#TeamIndia | #INDvENG | @Jaspritbumrah93 | @IDFCFIRSTBank pic.twitter.com/U9mpYkYp6v
— BCCI (@BCCI) February 3, 2024
বুমরা আরও বলেছেন, ‘জানতাম, এসব জিনিস আমার ফেরার প্রক্রিয়ারই একটা অংশ হবে। এটা বুঝতে পেরেই খেলতে নেমেছি। কারণ, আমি খেলাটাকে ভালোবাসি। ম্যাচ ফল কী হবে, তা ভাবিনি। এটাই নিজের ওপর থেকে চাপ কমিয়ে দিয়েছে এবং খেলা উপভোগ করতে সাহায্য করেছে। যে জিনিসগুলো আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না, সে দিকে মনোযোগ দেওয়ার দরকার নেই।’
নিখুঁত ইয়র্কারের ক্ষেত্রে বুমরার জুড়ি মেলা ভার। ইয়র্কার দিয়েই বেশির ভাগ সাফল্য পেয়েছেন। কীভাবে উইকেটশিকারি হয়ে উঠলেন, আইসিসিকে তা জানাতে গিয়ে শৈশবে ফিরে গেছেন বুমরা, ‘বাড়ন্ত বয়সে আমি টেনিস বল ও রাবার বল দিয়ে অনেক খেলেছি, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালীন ছুটির সময়ে বন্ধুদের সঙ্গে খেলে খেলে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি। তখন আমার মনে হতো উইকেট শিকারের এটাই (ইয়র্কার) একমাত্র উপায়। আমি ফাস্ট বোলিংয়ের বড় ভক্তও ছিলাম। টেলিভিশনে ফাস্ট বোলারদের (ইয়র্কার) দেখে মুগ্ধ হয়ে যেতাম। আমিও সে রকম কিছু করার চেষ্টা করতাম। টেনিস বল বা রাবার বলই আমার ইয়র্কার শেখার রহস্য কি না, জানি না। কিন্তু প্রতিনিয়ত অনুশীলন চালিয়ে যাওয়ার কারণেই আমি ইয়র্কার ভালোভাবে রপ্ত করতে পেরেছি।’
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৭৪ উইকেট নিয়ে বর্তমানে এই সংস্করণে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বুমরা। তাঁর ওপরে আছেন লেগ স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল (৯৬ উইকেট) ও অভিজ্ঞ পেসার ভুবনেশ্বর কুমার (৯০ উইকেট)। ভুবনেশ্বর দেড় বছর হলো ভারতীয় দলে উপেক্ষিত। আরেক অভিজ্ঞ পেসার ও সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি মোহাম্মদ শামিও চোটের কারণে নেই এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। দলের অন্য দুই পেসার মোহাম্মদ সিরাজ ও অর্শদীপ সিং অপেক্ষাকৃত অনভিজ্ঞ হওয়ায় বুমরার ওপর বাড়তি দায়িত্ব বর্তাবে।
সিরাজ ও অর্শদীপের উদ্দেশ্যে বুমরার বার্তা, ‘নিশ্চয় আমি ওদের অতিরিক্ত কিছু শেখানোর চেষ্টা করব না। এটা এমন কিছু, যা আমি শিখেছি। তবে আমাকে ওদের প্রয়োজন হলে সহায়তা করব। এমন নয় যে ওরা শুধু ভাগ্যবান, তাই এখানে (টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে) আসতে পেরেছে। আমি এখন পর্যন্ত যেসব অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, সেগুলো ওদের সঙ্গে ভাগাভাগি করব। তবে ওদের ওপর বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব না। উপায় ও সমাধান নিজেদেরই খুঁজে বের করতে হবে। এটা এই যাত্রারই অংশ।’