মা কালীর (Kali Puja) উৎপত্তির পৌরাণিক ব্যাখা জানতে গেলে সবার প্রথম পৌরাণিক একটি গল্প জানা প্রয়োজন। পুরাকালে শুম্ভ এবং নিশুম্ভ নামক দুই দৈত্য ছিল। সারা পৃথিবীর ত্রাসের কারণ ছিল এই দুই দৈত্য। দেবতারাও এই দুই দৈত্যের কাছে নিজেদের আত্মসমর্পন করেছিলেন। দেবলোক তাঁদের হাতছাড়া হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে দেব ইন্দ্র স্বর্গলোক ফিরে পেতে আদ্যাশক্তি মা মহামায়ার পুজো করতে থাকেন (Kali Puja)। ইন্দ্রের আরাধনায় সন্তুষ্ট হয়ে মা মহামায়া আবির্ভূত হন। বীর শরীর কোষ থেকে অন্য এক দেবী সৃষ্টি হয় যা কৌশিকী নামে ভক্তদের কাছে পরিচিত দেবী কৌশিকী মা মহামায়া দেহ থেকে নিঃসৃত হলে কালো বর্ণ ধারণ করে। এই রূপকেই মা কালীর (Kali Puja) আদিরূপ হিসেবে ধরা হয়।
মা কালীর পুজোর বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। তান্ত্রিক পদ্ধতিতেও মা কালীর পুজো হয়ে থাকে। অমাবস্যার রাত্রে মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে কালী পুজো করা হয়। দেবীকে সন্তুষ্ট করতেই পশু বলি দেওয়া হয় বা পশুর রক্ত দেওয়া হয়। এছাড়াও প্রসাদ হিসেবে লুচি এবং নানা ফল ভোগ দেওয়া হয়ে থাকে। গৃহস্ত সাধারণ অতান্ত্রিক ব্রাহ্মণ বাড়িতেও কালী পুজো হয়। এক সময় জমিদার বাড়িতে যে সব পুজো হতো সেখানে মহিষ বা ছাগল বলি দেওয়া হয়। কিন্তু এখন বেশিরভাগ জায়গায় বলি উঠে গেছে। তবে কিছু কিছু জায়গায় এখনও বলি হয়। পুরাকালে বা প্রাচীন সময়ে বিভিন্ন ডাকাতের দল নরবলির মাধ্যমে কালী পূজা করত করত বলে শোনা যায়।
সাধারণত বলা হয়, যাঁরা সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করতে চান, তাঁরা তন্ত্র-মন্ত্র ক্ষমতায় বিশ্বাসী। মানুষরূপী ঐশ্বরিক ক্ষমতার অধিকারী হতে চাইলে নিষ্ঠা সহকারে কালী পুজো করে থাকেন। এমকী তান্ত্রিকরাও কালীপুজোর দিন ছাড়াও বিভিন্ন অমাবস্যাতেও কালী পুজো করে থাকেন। হিন্দু শাস্ত্রে বলা রয়েছে, তন্ত্র মতে যে সব দেব-দেবীদের পূজো করা হয়, তাঁদের মধ্যে কালী পুজো অন্যতম।