মঙ্গলবার সকালে কেরালার ওয়ানাড় জেলার মেপ্পাড়ির কাছে পাহাড়ি অঞ্চলে ব্যাপক ভূমিধসে (Kerala Landslides) কমপক্ষে ৬৩ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও, শত শত মানুষ আটকা পড়েছে, তাদের নিরাপদে বের করে আনতে দ্রুত গতিতে উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে। এলাকার চারপাশে জল-কাদায় ঢুবে আছে, ধ্বংসযজ্ঞ (Kerala Landslides) স্পষ্ট দৃশ্যমান। রাজ্য থেকে কেন্দ্র, উভয় সরকার মিলেমিশে উদ্ধারকাজে সামিল হয়েছে। ভয়ঙ্কর ধসের বর্ণনা দিয়েছেন কেরলের কংগ্রেস নেতা কে সুরেশ।
তিনি বলেন, “ওয়ানাড় ভূমিধস একটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা, কারণ এতে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেতুটি ভেঙে পড়েছে এবং জল এখনও প্রবাহিত হচ্ছে। অবস্থার অবনতি হয়েছে। ভূমিধ্বসস্থলে (Kerala Landslides) একটি অকল্পনীয় পরিস্থিতি রয়েছে। একটি গ্রাম সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং ভেসে গেছে। কেরল সরকার উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার, বিমান বাহিনী, এনডিআরএফ সবাই সেখানে পৌঁছেছে। যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে।’
কীভাবে চলছে উদ্ধার অভিযান?
এই অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মালাপ্পুরমের নীলাম্বুর এলাকার চালিয়ার নদীতে অনেকে ভেসে গেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে, মুন্ডাক্কাইয়ে বেশ কয়েকটি বাড়ি, দোকান এবং যানবাহন ধ্বংসস্তূপের (Kerala Landslides) নিচে চাপা পড়েছে। ঘটনাস্থলে যাওয়ার একটি সেতু ভেসে গেছে, যার ফলে উদ্ধার প্রচেষ্টা কঠিন হয়ে পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন আশ্বাস দিয়েছেন যে অস্থায়ী সেতু নির্মাণ, হেলিকপ্টারে করে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া এবং দুর্যোগস্থলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়া হবে।
ভারতীয় বায়ুসেনার ২টি হেলিকপ্টারও পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু বৃষ্টির কারণে অবতরণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। এনডিআরএফ-এর একটি দলও ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। উদ্ধারকাজে সেনাও মোতায়েন করা হয়েছে। 225 জন কর্মীর সমন্বয়ে সেনাবাহিনীর চারটি দল উদ্ধারকাজে পৌঁছেছে। আহতদের সহায়তার জন্য চিকিৎসা কর্মীদেরও সেনা দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ভূমিধসে গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মুন্ডাক্কাই, চুরালমালা, আত্তামালা এবং নুলপুঝা গ্রামের ছবি বদলে গেছে এবং তারা অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অনেক জায়গায় যানবাহনকে গাছের ডালে আটকে থাকতে এবং এখানে ওখানে ডুবে থাকতে দেখা গেছে। স্ফীত নদীগুলি তাদের গতিপথ পরিবর্তন করেছে এবং আবাসিক এলাকায় প্রবাহিত হচ্ছে, যার ফলে আরও ধ্বংস হচ্ছে।
পাহাড় থেকে পড়ে যাওয়া বিশাল পাথর উদ্ধারকর্মীদের পথে বাধা সৃষ্টি করছে। উদ্ধারকাজে নিয়োজিত লোকজনকে ভারী বৃষ্টির মধ্যে মৃতদেহ ও আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। ভূমিধসের ঘটনায় বিশাল গাছ উপড়ে পড়েছে এবং বন্যার জলে সবুজ অঞ্চল ধ্বংস হয়েছে।