সমীর সাহা, নদিয়াঃ করোনা পরিস্থিতির মধ্যে কি কি নিয়ম অর্থাৎ কি ধরনের সরকারী বিধিনিষেধ মেনে দুর্গা পুজো করতে হবে, সেই নিয়ে নবদ্বীপ বিধানসভার ২৬১টি বাড়ি এবং বারোয়ারীর পুজো উদ্যোক্তাদের নিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় নবদ্বীপ মিউনিসিপ্যালিটির অডিটোরিয়ামে নবদ্বীপ থানা তথা কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার পরিচালনায় এক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা,এস, ডি,ও (সদর) মনীশ ভার্মা, পুরপ্রশাসক বিমানকৃষ্ণ সাহা, ডিএসপি ডিএন্ডটি মাকসুদ হাসান, বিডিও বরুনাশীষ সরকার, নবদ্বীপ থানার আইসি কল্লোল ঘোষ এবং দমকল ও বিদ্যুৎ পর্ষদের আধিকারিক সহ বিশিষ্ট ব্যক্তি সহ পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা।
বিভিন্ন প্রশাসনিক আধিকারিকরা এই বছর কোভিড নিয়ম মেনে কি ভাবে পুজো করতে হবে মুলত সেই সব বিধিনিষেধের প্রসঙ্গই তুলে ধরেন তাদের বক্তব্যে ।
নবদ্বীপ বিধানসভা এলাকায় মোট ২৬১টি পুজো হয়। তার মধ্যে পুরসভা এলাকায় হয় ১১৬টি, বিভিন্ন ব্লকে হয় ১১৭ টি এবং বাড়ির পুজো হয় ২৮টি।
…………………….Advertisement………………………
কি কি করতে হবে পুজো কমিটিগুলিকে?
১। অনলাইনে আবেদন করতে হবে অর্থাৎ অনলাইনে পুজোর অনুমোদন নিতে হবে।
২। যেসব বড় বড় বারোয়ারীগুলোতে দর্শনার্থী সংখ্যা খুবই বেশি হয়। সেই সব বারোয়ারীগুলোতে সিসি ক্যামেরা রাখতে হবে।
৩। পরিস্থিতিতে প্রতিমা বিসর্জনের দিন চারদিন করা হবে। ২৬ থেকে ২৯ তারিখ পর্যন্ত। প্রতিমা বিসর্জনের জন্য কোন রকম প্রসেশন করা যাবে না।
৪। শব্দ দূষণ মেনে চলতে হবে রাত ১০টার পর কোন রকম মাইক বাজানো যাবে না। ডিজে সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ থাকবে।
৫। প্রতিটি পুজো কমিটিকে তাদের নিজস্ব ভলান্টিয়ার রাখতে হবে। যেসব বারোয়ারীতে অত্যধিক ভিড় হয়। সেই সব বারোয়ারীতে অবশ্যই মহিলা ভলান্টিয়ার রাখতে হবে।
৬। পুজোর প্যান্ডেল তিনদিক খোলা রাখতে হবে। প্যান্ডেলের ভেতরে বেশী ভিড় করা যাবে না। মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজ ব্যবহার করতে হবে।
যারা মাস্ক পড়ে আসবে না। তাদেরকে বারোয়ারী থেকে মাস্ক দিতে হবে।
৭। ভলান্টিয়ারদের ফেস শিল্ড ব্যবহার করতে হবে।প্রসাদ বিতরণ, অঞ্জলি দেওয়ার সময় ভিড় এড়াতে সময় ভাগ করে দিতে হবে।
৮। সিঁদুর খেলা বা কোনও রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না।
৯। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বিভিন্ন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান কোন প্রতিমা ভাল, কোথায় প্যান্ডেল ভালো ইত্যাদির জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেন। সেজন্য বিচারকদের প্যান্ডেল প্যান্ডেল ঘুরে বেড়াতে। এবছর তাদের জন্য নিদিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত।
১০। কোন রকম উদ্বোধন অনুষ্ঠান করা যাবে না। ভার্চুয়াল আর অনলাইন উদ্বোধন হবে।
তবে আজকের এই সমন্বয় সভায় প্রশাসন থেকে বারোয়ারীর কাছে অনুরোধ করা হয়েছে। আগে থেকে প্রতিমা রেডি করবেন। ভিড় এড়াতে যাতে তৃতীয়া থেকে দর্শন করার সুযোগ পান সেদিকে লক্ষ রাখুন। কোনও রকম কার্নিভাল হবে না। বিসর্জনের সময় কোন বাদ্যযন্ত্র বাজানো যাবে না।
এদিন দমকল বিভাগ থেকে বলা হয় এবছর ফায়ার বিগেড চার্জ লাগবে না। বিদ্যুৎ বিল যা হবে তার অর্ধেকটা ছাড় দেবে বিদ্যুৎ পর্ষদ। এদিনের এই সমন্বয় সভা এস,ডি,ও (সদর) মনীশ ভার্মা বলেন, ‘এই করোনা পরিস্থিতিতে ১০ বছরের নিচে এবং ৬০ বছরের ওপর কেউ বাড়ি থেকে দয়া করে বের হবেন না। বাড়ি থেকেই আপনারা আপনাদের ভক্তি নিবেদন করুন।’