সম্পত্তি করের পেনাল্টি এবং সুদ সম্পূর্ণ মকুবের সিদ্ধান্ত পুরসভার

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতাঃ করোনা সংক্রমণের জেরে চলছে লকডাউন। সম্পূর্ণ রুপে আনলক না হওয়ায় বেজায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। অনেকেই কাজ হারিয়েছেন। আবার অনেকের কাজ থাকলেও উপার্জন কমে গিয়েছে। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে বিশেষ উদ্যোগী হল কলকাতা পুরসভা।

কলকাতা পুরসভার অধীনস্থ এলাকায় সম্পত্তি করের উপরে আর দিতে হবে না কোনও পেনাল্টি এবং সুদ। সম্পত্তি কর সঠিক সময়ে না জমা দেওয়া হলে তার জন্য শাস্তির বিধান ছিল। সম্পত্তির মালিককে করের উপরে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হল পেনাল্টি হিসেবে। সেই সঙ্গে দিতে হতো বকেয়া টাকার উপরে সুদ। সেই সুদের হার আবার নির্ধারণ করা হতো চক্রবৃদ্ধি হারে।

করোনা ভাইরাসের আবহে জারি হওয়া লকডাউনে মানুষকে স্বস্তি দিতে সেই সকল পেনাল্টি এবং সুদ সম্পূর্ণ মকুব করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। শনিবার কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মন্ডলীর একটি বৈঠক হয়। পুর-প্রশাসক ফিরাহ হাকিমের উপস্থিতিতে হওয়া সেই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থির হয়েছে যে সম্পত্তি কর যাদের বাকি রয়েছে তাঁদের কেবলমাত্র বকেয়া টাকা দিলেই হবে। পেনাল্টি বাবদ অতিরিক্ত কোনও টাকা দিতে লাগবে না। সেই সঙ্গে গুনতে হবে না বকেয়া টাকার উপরে কোনও সুদ।

সাধারণত সপত্তি করের ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে কিছুটা সুরাহা দেওয়া হতো পুরসভার পক্ষ থেকে। বিপুল পরিমাণ ওর বকেয়া হয়ে গেলে তার উপরে পেনাল্টি এবং সুদের হার অনেকটাই হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে সম্পত্তির মালিকের অবস্থায় কথা বিবেচনা করে কিছুটা অর্থ মকুব করে দেওয়া হতো। যে পরিমাণ পেনাল্টি এবং সুদ ধার্য করা হতো তার সর্বোচ্চ শতকরা ৫০ ভাগ মকুব করা হয়ে থাকতো। তাও আবার বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে। এবার সকলের জন্যেই একই নিয়ম জারি হতে চলেছে। সম্পূর্ণভাবেই মকুব করে দেওয়া হচ্ছে পেনাল্টি এবং সুদ। যা নিঃসন্দেহে খুবই স্বস্তিদায়ক হতে চলেছে সাধারণ মানুষের কাছে।

কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতর নবান্ন থেকে সিলমোহর দিলেই তা কার্যকর করতে পারবে পুরসভা। এখন সেই নবান্নের অনুমোদনের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে পুর-প্রশাসকেরা।

সূত্রের খবর পুর প্রশাসক মন্ডলীর কাছে এই কর মকুব করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন পুরসভার কর মূল্যায়ণ দফতরের তিন আধিকারিক। তাঁদের সেই প্রস্তাবকেই এদিন মান্যতা দিয়েছেন পুর-প্রশাসকেরা। এর আগে তিন বার এই ধরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পুরসভা। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের জমানায় এমনই সম্পূর্ণ রূপে পেনাল্টি ও সুদ মুকুব করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পুরসভা।

দুই দশকের কম সময়ের মধ্যে তিনবার ওই ধরণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে স্থির হয়েছিল যে এমন বড় কোনও পদক্ষেপ আর নেওয়া হবে না কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে। কিন্তু বর্তমান সঙ্কট্ময় পরিস্থিতিতে মানুষকে সুরাহা দিতে ফের একবার সম্পত্তি করের উপরে পেনাল্টি এবং সুদ মকুব করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল পুরসভা।