রজত দে হত্যাকাণ্ডে অনিন্দিতাকে যাবজ্জীবনের সাজা শোনাল আদালত

নিজস্ব প্রতিনিধি,বারাসাতঃ  কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী রজত দে হত্যাকাণ্ডে তার স্ত্রী অনিন্দিতা পাল দে কে বুধবার যাবজ্জীবন সাজা শোনালেন বারাসত আদালতের বিচারক।গ্রেপ্তার হওয়ার প্রায় এক বছর ৯ মাস ১৮ দিনের মাথায় অভিযুক্তের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষনা করলেন বিচারক।

 এদিন বেলা ১১ টা ১৫ নাগাদ খুনের মামলার অভিযুক্তকে আনা হয় বারাসতের কোর্ট লকআপে।কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে নিয়ে আসা হয় ফার্স্ট ট্র্যাক তৃতীয় কোর্টের বিচারক সুজিত কুমার ঝা এর এজলাশে।মামলার শুনানি হলেও এদিন বিকেলে অভিযুক্ত আইনজীবী অনিন্দিতা পাল দে কে যাবজ্জীবনের সাজা ঘোষনা করেন বিচারক। সাজা ঘোষনার কথা শুনেই এজলাশের মধ্যেই কান্নায় ভেঙে পড়েন অনিন্দিতা।

মেয়ের কান্না দেখে সাথেসাথে পাশে এসে দাঁড়ান বাবা অলোক পাল এবং অনিন্দিতার আইনজীবী সোহিনী অধিকারী।বাবাকে কাছে পেয়ে তাকে জড়িয়ে ধরেন অনিন্দিতা।দুজনেই আশ্বস্ত করে বলেন তুই চিন্তা করিস না।আমরা এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে যাব।এরপরেই মহিলা পুলিশের ঘেরাটোপেই এজলাশ থেকে বের হন অনিন্দিতা।

গত সোমবারই অভিযুক্ত আইনজীবী অনন্দিতা পাল্ দে কে দন্ডবিধীর ৩০২ (খুন) এবং ২০১(তথ্য প্রমান লোপাট)ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন বিচারক সুজিত কুমার ঝা।এদিন সকালের পর থেকেই বারাসত আদালতে হাজির হয়েছিলেন অভিযান ওয়েলফেয়ার চ্যারিটিবল ট্রাস্ট নামের একটি পুরুষাধিকার সংগঠনের সদস্য সদস্যারা।তারা হাতে হাতে জাস্টিস ফর রজত দে  প্ল্যাকার্ড নিয়ে আদালত চত্বরেই অভিযুক্ত অনিন্দিতা পাল দের ফাঁসির দাবি তোলেন।

এজলাশ থেকে কোর্ট লকআপে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত আইনজীবীদের একাংশ এবং পুরুষাধিকার সংগঠনের সদস্যরা অনিন্দিতার ফাঁসি চাই বলে স্লোগান দিতে থাকেন।পুলিশি ঘেরাটোপের মধ্যেই অনিন্দিতাকে বারবার বলতে শোনা গেছে আমি নির্দোষ আমি নির্দোষ।

এই মামলার সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি বিচারকের কাছে সর্বোচ্চ সাজাই চেয়েছিলাম।কিন্তু বিচারক এদিন ৩০২(খুন) ধারায় অভিযুক্ত আইনজীবী অনিন্দিতা পাল দে কে যাবজ্জীবনের সাজা দিয়েছেন এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা।অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের ঘোষনা করেন। পাশাপাশি ২০১(তথ্য প্রমান লোপাট) ধারায় ১ বছরের জেল এবং ২ হাজার টাকা জরিমানা।অনাদায়ে আরও তিন মাসের জেলের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এদিন বিভাস বাবু বলেন, যেহেতু অভিযুক্তের সাড়ে তিন বছরের একটা ছেলে আছে।এছাড়া অভিযুক্তের বয়সও কম।এই দুটি বিষয়  চিন্তা ভাবনার মধ্যে রেখেই বিচারক এদিন যাবজ্জীবনের সাজাই দিয়েছেন।অন্যদিকে অনন্দিতার আইনজীবী সোহিনী অধিকারি বলেন, আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট নই।এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই আমরা হাইকোর্টে যাব।

এই বিষয়ে মৃত আইনজীবী রজত দের বাবা সমীর কুমার দে বলেন, ‘আমরা অনিন্দিতার আরেকটু কঠোর সাজা হোক চেয়েছিলাম।কিন্তু তবুও এদিনের বিচারকের রায়ে সন্তুষ্ট। প্রথম দিকে তদন্তে পুলিশের গাফিলতি ছিল।কিন্তু তদন্তকারী আধিকারিক পরিবর্তন হওয়ার পর তদন্তে গতি এসেছে।’

Google news